বিগত ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, কথা বলার স্বাধীনতা হরণ করেছে এবং জনগণের সম্পদ লুট করেছে এমন অভিযোগ করে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বিএনপি সবসময় জনগণের অধিকার রক্ষায় পাশে ছিলো এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। তিনি বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি ইনশাল্লাহ ক্ষমতায় যাবে।
শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদ মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে এই জনসভার আয়োজন করা হয়।
এবিএম মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে আপনাদের সামনে অনেকে ভোট চাইতে আসবে। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছিল ১৯৯১ সালের নির্বাচনে ১৮টি এবং ২০০১ সালে ১৭টি, সেটিও বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন করে।
কিন্তু বিএনপির বাইরে গিয়ে ১৯৯৬ সালে তারা তিনটি এবং ২০০৮ সালে মাত্র দুটি আসন পায়। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে, কিন্তু ইসলামি আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীক নিয়ে কোনো আসন জিততে পারেনি।
তিনি আরো বলেন, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর বিএনপি নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পাহারা দিয়েছে বিএনপি কর্মীরা। সাধারণ মানুষ যখনই বিপদে পড়েছে, আমরা তাদের পাশে থেকেছি আগামী দিনেও থাকবো।
চাকরিপ্রত্যাশী তরুণদের বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে লেখাপড়া শেষ করার পর এক বছর পর্যন্ত বেকার ভাতা দেওয়া হবে।
দুর্গম দ্বীপ উপজেলা রাঙ্গাবালীতে সরকারি হাসপাতাল না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই আসনে আওয়ামী লীগের সময় দুইজন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, কিন্তু কেউ হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি। তারা জনগণের নয়, নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করেছেন।
এবিএম মোশাররফ বলেন, আগামী দিনে উন্নয়ন চাইলে যারা জনগণের কল্যাণে কাজ করবে, তাদেরই ভোট দিতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রধানমন্ত্রী হবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে জনগণ কখনো সুষ্ঠু ভোট দিতে পারেনি কখনো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, কখনো দিনের ভোট রাতে হয়েছে, কিংবা নিজেরা নিজেরা ভোট দিয়েছে। তাই আগামী দিনে দলীয় সরকারের অধীনে নয়, নির্বাচন হতে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন রাঙ্গাবালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহমান ফরাজী এবং সঞ্চালনা করেন উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ হাওলাদার।
জনসভাকে ঘিরে ব্যানার-ফেস্টুনে সজ্জিত হয় পুরো উপজেলা সদর। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের হাজারো নেতাকর্মী এতে অংশ নেন।


