রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের পাঁচবাড়িয়া গ্রামে একটি বিদ্যালয়ের নাম নিয়ে বছর ধরে চলছে বিতর্ক ও বিভ্রান্তি। প্রতিষ্ঠাকালীন ‘হাছিনা ওয়াজেদ’ নামে থাকা স্কুলটির নাম শেখ পরিবারের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় একাধিকবার পরিবর্তনের শিকার হয়েছে। এতে স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও এলাকাবাসী পড়েছেন বিড়ম্বনায়।
১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়টি ‘পাঁচবাড়ীয়া হাছিনা ওয়াজেদ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ নামে। স্থানীয় বাসিন্দা ও তৎকালীন পাংশা উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুনিবর রহমান তার মা হাছিনা বেগম ও বাবা ওয়াজেদ আলীর নামানুসারে বিদ্যালয়টির নামকরণ করেন।
বিদ্যালয়ের জন্য ৪টি পরিবার ৩৩ শতক জমি দান করে এবং ওই পরিবার থেকেই চারজন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। বর্তমানে তাদের একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলফাজ উদ্দিন। তিনি এখনো কর্মরত আছেন এবং শিগগির অবসরে যাচ্ছেন।
এর আগে ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের সময় সরকারের পক্ষ থেকে নামের বানান পরিবর্তন করে করা হয় ‘পাঁচবাড়িয়া হাসিনা ওয়াজেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’। শেখ হাসিনা ও তার স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার নামের সঙ্গে মিল থাকায় এমন সংশোধন আনা হয় বলে ধারণা করা হয়।
সর্বশেষ গত বছরের ৫ আগস্টের পর অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনায় শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামে থাকা ৮০৮টি প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনার নাম পরিবর্তন করা হয়। সেই তালিকার ৬০৩ নম্বরে ছিল বিদ্যালয়টি। এরপর বিদ্যালয়ের নাম থেকে ‘হাসিনা ওয়াজেদ’ অংশ বাদ দিয়ে রাখা হয় শুধু ‘পাঁচবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’।
নাম নিয়ে দ্বিধা ও বিতর্ক প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় আমরা মুনিবর রহমানের প্রস্তাবে তার মা-বাবার নামে নাম রাখায় সম্মত হই। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শেখ হাসিনার সঙ্গে নামের মিল থাকায় আমরা বিড়ম্বনায় পড়ি। এখন আবার সেই অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে স্থানীয়দের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।’
সহকারী শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘এলাকার সবাই জানেন, হাছিনা ও ওয়াজেদ মুনিবর রহমানের মা-বাবা। শেখ হাসিনা বা তার স্বামীর সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। তবু রাজনৈতিক কারণে নাম বদলে বিড়ম্বনা তৈরি হচ্ছে।’
এ বিষয়ে পাংশা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘তৎকালীন কর্মকর্তা মুনিবর রহমান এ নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিব বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। আবেদনে তিনি স্পষ্ট করেছেন, নামটি তার মা-বাবার নামে রাখা হয়েছে। শেখ পরিবারের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।’


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন