রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার জয়পুর গ্রামের ছোট্ট শিশু তাসফিয়া। বয়স মাত্র ৩ বছর হতে চলল। অথচ জীবনের নিষ্ঠুরতম লড়াইয়ে নেমেছে সে। ফুলের মতো নিষ্পাপ এই শিশুটি আজ ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। তার চোখে বাসা বেঁধেছে এক বিরল ক্যান্সার—রেটিনোব্লাস্টোমা। খেলার মাঠে দৌড়ানোর বয়সে তাসফিয়াকে আজ হাসপাতালের শয্যায় লড়াই করতে হচ্ছে মৃত্যুর সঙ্গে। নিষ্পাপ শিশুটির যন্ত্রণায় যে-কারও হৃদয় ভেঙে যাবে।
তাসফিয়ার মা শাকিলা বেগম জানালেন, ‘সন্তানের বয়স যখন মাত্র তিন মাস, তখন তার চোখে হঠাৎ ফোলা দেখা দেয়। চিকিৎসকের পরামর্শে চোখ অপারেশন করে ল্যাব টেস্ট করানো হয়। ২০২৩ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে চোখ তুলে ফেলা হয়। পরীক্ষায় ধরা পড়ে ক্যান্সার। এরপর এক মাস পর পাথরের চোখ বসানো হলেও ধীরে ধীরে সেই স্থান আবার ফুলতে শুরু করে। চিকিৎসকদের পরামর্শে ঢাকার পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।’
ছয় মাস বয়স থেকে তাসফিয়াকে প্রতি ২১ দিন অন্তর কেমোথেরাপি নিতে হচ্ছে, যার প্রতিটি খরচ প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। আড়াই বছর ধরে বাবা-মা নিয়মিত এই ব্যয় বহন করছেন।
কিন্তু সাধারণ রিকশাচালক বাবা মুরাদ হোসেন বাবুর জন্য মেয়ের চিকিৎসার খরচ এখন পাহাড়সম বোঝা। ভিটেমাটি বিক্রি করে ইতোমধ্যেই প্রায় ১৫ লাখ টাকা খরচ করেছেন তিনি। বর্তমানে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে রিকশা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন, যেখানে প্রতি তিন সপ্তাহে কেমোথেরাপির খরচ বহন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অসহায় কণ্ঠে মুরাদ হোসেন বলেন, ‘আমি যা ছিল সব দিয়েছি। আমার একটাই স্বপ্ন, আমার মেয়েটা যেন বাঁচে। দয়া করে, আমার মেয়ের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করুন।’
তিনি সমাজের বিত্তবান ও মানবিক মানুষদের কাছে তাসফিয়ার পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন