ঢাকা রবিবার, ০৯ নভেম্বর, ২০২৫

বাড়িতে বোমা, পুকুরে বিষ

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৫, ০৭:০০ পিএম
ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত দুই প্রার্থীর স্বজনদের বাড়ি ও সম্পত্তিতে হামলার ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। শনিবার রাত ও রোববার ভোরে এসব হামলার ঘটনা ঘটে। একটিতে হাত বোমার বিস্ফোরণ, অন্যটিতে দীঘিতে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় দেড় কোটি টাকার মাছ মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন মনোনয়নবঞ্চিত উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কামাল হোসেনের চাচা আবদুস সোবহান এবং মনোনয়নবঞ্চিত জেলা যুবদলের সদস্যসচিব রেজাউল করিম টুটুলের শ্বশুর আবদুস সামাদ। আবদুস সোবহান বাগমারা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং আবদুস সামাদ একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম জানান, শনিবার রাত ২টার দিকে উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের শান্তিপাড়া গ্রামের আবদুস সামাদের বাড়িতে পরপর দুটি হাত বোমা নিক্ষেপ করা হয়। বিকট শব্দে এলাকাবাসীর ঘুম ভেঙে যায়। এ সময় স্থানীয়রা দুজনকে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যেতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিত্যক্ত একটি কৌটা ও হাত বোমার আলামত উদ্ধার করে।

আবদুস সামাদ বলেন, ‘রাতের ওই বিস্ফোরণে সবাই ভয় পেয়ে গিয়েছিল। এভাবে নিরীহ মানুষের বাড়িতে হামলা অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’

এদিকে উপজেলার মধ্য দৌলতপুর এলাকার দুবিলায় বিএনপি নেতা আবদুস সোবহানের পঞ্চাশ বিঘা আয়তনের একটি দীঘিতে রাতে বিষ মেশানো হয়। সকালে তিনি পুকুরে ভেসে ওঠা মৃত মাছ দেখে বিষয়টি বুঝতে পারেন। তিনি জানান, ‘ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করছিলাম। বিষ দেওয়ায় প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। দলীয় কোন্দল থাকতে পারে, কিন্তু একজন মানুষকে পথে বসানো অন্যায়।’

বাগমারায় সম্প্রতি বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি এম জিয়াউর রহমান রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে দলের চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন। কিন্তু কামাল হোসেন ও রেজাউল করিমও একই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই তাদের অনুসারীদের ওপর হামলা, পুকুরে বিষ প্রয়োগ ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠছে।

রেজাউল করিম টুটুল বলেন, ‘আমার শ্বশুর রাজনীতি করেন না, তবুও আমার কারণে তাকে টার্গেট করা হয়েছে। মনে হয়, আতঙ্ক সৃষ্টি করে রাজনৈতিক বার্তা দেওয়া হচ্ছে। একের পর এক মনোনয়নবঞ্চিতদের ক্ষতি করা রহস্যজনক—আমি নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।’