রাজশাহী নগরীর ডাবতলা এলাকায় বাসায় ঢুকে বিচারকের ছেলে হত্যার কারণ উদঘাটন করেছে পুলিশ। রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আবদুর রহমানের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসী (৪৪) থেকে নিয়মিত টাকা নিতেন অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য লিমন মিয়া (৩৫)। টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিলে ক্ষুব্ধ হয়ে বিচারকের ছেলে তাওসিফ রহমান সুমনকে (১৬) খুন এবং স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে আরএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হত্যাকাণ্ডে আটক গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার লিমন মিয়ার সঙ্গে বিচারকের স্ত্রীর পূর্ব পরিচয় ছিল। সেই সূত্র ধরে বিভিন্ন সময়ে তিনি লুসীর কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিতেন। একপর্যায়ে টাকা দেওয়া বন্ধ করলে লিমন বিভিন্নভাবে তাকে ব্ল্যাকমেইল করা শুরু করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে লিমন ‘জজের স্ত্রীর ছোট ভাই’ পরিচয় দিয়ে ভাড়া বাসায় প্রবেশ করেন। কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে তিনি ছুরি বের করলে লুসী প্রাণভয়ে দৌড়ে একটি কক্ষে ঢুকে ভিতর থেকে দরজা আটকে দেন। লিমন দরজায় লাথি মেরে ভেঙে ভিতরে ঢোকার পর লুসীকে রক্ষা করতে ছেলে তাওসিফ ঘরে ঢোকে।
একপর্যায় ধস্তাধস্তির সময় লিমন বিচারকের স্ত্রী ও ছেলেকে ছুরিকাঘাত করেন। এতে লিমন নিজেও আহত হন। পরে স্থানীয়রা তিনজনকেই উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাওসিফকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় বিচারকের স্ত্রী রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হামলাকারী লিমনও পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
খবর পেয়ে বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। পুলিশের একাধিক ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে, বিচারকের স্ত্রীর সঙ্গে হামলাকারীর অর্থনৈতিক বিরোধের জেরেই এ ঘটনা ঘটেছে। তার বিরুদ্ধে রাজপাড়া থানায় মামলা করা হবে। তদন্তের মাধ্যমে বিস্তারিত জানা যাবে।’



