রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুরে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত দ্বিতীয় সড়ক সেতুর পশ্চিম তীরে সেতু রক্ষা বাঁধের প্রায় ৬০ মিটার এলাকা ধসে পড়েছে। এতে বাঁধে ৭০ ফুট গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বাঁধের ধস ও পানি বৃদ্ধির কারণে লালমনিরহাট-রংপুর সড়কসহ পার্শ্ববর্তী হাজারের বেশি পরিবার বিপদের মুখে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতের পানি তিস্তা নদীর স্রোতকে তীব্র করেছে। বাঁধের নিচের মাটি ধুয়ে ব্লকগুলো ধসে পড়ছে এবং অবশিষ্ট ব্লকগুলোও ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পুরো বাঁধ ভেঙে সেতু ও সংলগ্ন সড়ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মহিপুর এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, গত দুই বারের বন্যায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও রক্ষণাবেক্ষণ কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেনি। এবারও পরিস্থিতি ভয়াবহ। তিস্তার পানি আরও বেড়ে গেলে সেতু ও হাজারের বেশি পরিবার বিপদের মুখে পড়বে।
২০১৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) ১২১ কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তার ওপর দ্বিতীয় সড়ক সেতুটি নির্মাণ করে। সেতুটি রংপুর-লালমনিরহাটের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করেছে। কিন্তু ভাঙন নিয়ন্ত্রণে না আসলে সেতু ও সংলগ্ন সড়ক ঝুঁকির মুখে।
এছাড়া তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচরের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নদীর তীব্র স্রোতে শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিবদেব গ্রামে কমপক্ষে ৪৯টি বসতবাড়ি, একটি ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ও একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৩০ পরিবারকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সাময়িক সহায়তা হিসেবে এক বান্ডিল ঢেউটিন এবং নগদ ৩ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। স্থানীয়রা স্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, রংপুর ও তিস্তা নদী সংলগ্ন অঞ্চলে বন্যার ঝুঁকি রয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন