বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রেজাউল করিম, রংপুর

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৫, ০৮:৫৯ পিএম

তিস্তা বাঁচাতে উত্তাল উত্তরাঞ্চল, পাঁচ জেলায় মশাল প্রজ্বালন

রেজাউল করিম, রংপুর

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৫, ০৮:৫৯ পিএম

তিস্তা বাঁচাতে মশাল প্রজ্বালন। ছবি- রূপালী বংলাদেশ

তিস্তা বাঁচাতে মশাল প্রজ্বালন। ছবি- রূপালী বংলাদেশ

তিস্তা বাঁচানোর দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা উত্তরাঞ্চল। তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ দ্রুত শুরু করার দাবিতে ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ আন্দোলনের অংশ হিসেবে রংপুর বিভাগের পাঁচটি জেলায় (লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা) একযোগে ১১টি পয়েন্টে মশাল প্রজ্বালন কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন হয়েছে।

​বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় একই সময়ে এই কর্মসূচি পালিত হয়। আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক সাবেক উপমন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। মশাল প্রজ্বালন কর্মসূচিতে লাখো মানুষের সমাগম হয়।

​প্রবাহিত ১৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের তিস্তা নদী রক্ষায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলা ভেদ করে বয়ে যাওয়া এই নদীর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা না হলে বৃহত্তর রাজনৈতিক আন্দোলন করা হবে—এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।

​তিনি বলেন, ‘তিস্তা শুধু উত্তরাঞ্চলের নয়, বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ। অবিলম্বে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করতে হবে। জনগণ এখন তিস্তার ন্যায্য অধিকার আদায়ে রাস্তায় নেমেছে।’

​আলোচ্য কর্মসূচির সময় দুলু বলেন, ‘তিস্তা সমস্যা কোনো স্থানীয় ইস্যু নয়—এটি একটি জাতীয় সমস্যা। দীর্ঘ ১৬ বছর এক ধরনের ফ্যাসিবাদী শাসন রংপুরের মানুষের বুকের ভিতরে জগদ্দল পাথরের মতো বসিয়ে দিয়েছে, তবুও আমাদের কান্না থামেনি।’ তিনি আরও অভিযোগ করে জানান, তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে এবং সরকারের ধীরগতির কারণে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা আছে।

​তিস্তা মহাপরিকল্পনার বিরোধীদের উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনার বিপক্ষে যারা দাঁড়াবে, তারা জাতীয় শত্রুতে পরিণত হবে।’

​একই সঙ্গে তিনি সরকারকে নভেম্বরের মধ্যেই মহাপরিকল্পনার কাজ বাস্তবায়ন শুরু করার অনুরোধ জানান। তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনের তিন মাস আগেই তিস্তা মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু করে দেওয়া হোক। যদি সময়মতো কাজ শুরু না করা হয়, তাহলে রংপুরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে রংপুর বিভাগ অচল এবং স্তব্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি।

‎​আন্দোলন সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক মাসে তিস্তার ভাঙন ও চর উত্থানের ফলে লক্ষাধিক মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কৃষিজমি বিলীন হওয়া, বাড়িঘর ভেঙে পড়া ও পরিবেশগত ক্ষতির বিরুদ্ধে স্থানীয়রা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন। স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিনের অবহেলায় তিস্তার বুকে জেগে উঠছে অসংখ্য চর, ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি। ফলে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন লাখো মানুষ।

​এর আগে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের পক্ষ থেকে লালমনিরহাটে গণমিছিল, গণসমাবেশ, পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়।

‎​মশাল প্রজ্বালন কর্মসূচিতে অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, ছাত্র ও যুব সমাজের নেতাকর্মীরা। তাদের স্লোগান ছিল—‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই, তিস্তার ন্যায্য হিস্যা চাই।’

‎​দুলুর দাবি, নদী রক্ষায় জনগণের এই ঐক্যবদ্ধ অবস্থান প্রমাণ করে যে তিস্তা ইস্যুটি এখন আর কেবল পরিবেশগত বা অর্থনৈতিক বিষয় নয়, এটি উত্তরাঞ্চলের মানুষের জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন। তিনি আরও বলেন, এই অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ নেমে আসার আগেই সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি সতর্ক করে দেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের মানুষ খাদ্যের জন্য রাজধানী অভিমুখে লংমার্চ করতে বাধ্য হবে।

কর্মসূচিতে অংশ নেন তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানী, লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, রংপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শামসুজ্জামান শামু, কাউনিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হক ভরসাসহ পাঁচ জেলা বিএনপি ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ। 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!