ঢাকা সোমবার, ১২ মে, ২০২৫

সিরাজগঞ্জে সরকারি বরাদ্দের গরু বিতরণে অনিয়ম

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ১১, ২০২৫, ১২:৪৮ পিএম
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি বকনা বাছুর। ছবি-সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি বকনা বাছুর বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

নাম, ঠিকানা ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর তালিকায় থাকলেও মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে অন্যের। ফলে প্রকৃত সুফলভোগীরা গরু পাননি। 
  
ভুক্তভোগী এক পরিবার জানায়, গত ৩০ এপ্রিল তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ ও ভেটেনারি হাসপাতালের আয়োজনে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থায়নে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর চত্বরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ৯০ জনের মধ্যে বকনা বাছুর বিতরণ করা হয়। এ সময় তালিকায় নাম থাকা কয়েক জন বাছুর না পেলে হট্টগোল সৃষ্টি হয়।

পরবর্তীকালে রতন কুমার সিং নামের একজনকে তার বাছুর বুঝিয়ে দেওয়া হলেও আরও কয়েক জন বাছুর না পাওয়ার অভিযোগ করতে থাকেন।

এরপর তাদের বাছুর দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ঘুরে ঘুরেও কোনো সমাধান মিলছে না বলে জানান তারা। 

 

তাড়াশের ক্ষিরপোতা গ্রামের সবিতা রানী বলেন, গরু বিতরণের তালিকায় জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর আমার। নাম পাল্টে সবিতা রানীর স্থলে সনজিতা রানী নাম দেওয়া হয়েছে। আমার স্বামী বাসুদেব সরকারের নামের স্থলে দেবাশিষ সরকার নাম দেওয়া হয়েছে। মোবাইল নম্বর অন্য কারো। 

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘আমাদের ক্ষিরপোতা গ্রামে সনজিদা, দেবাশিষ সরকার নামে কোনো মানুষের বসবাস নেই। ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। গরু বিতরণের আগের রাতেও তালিকায় হুবহু আমাদের নাম ঠিকানা ছিল। আমি এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করব।’

তালম ইউনিয়নের মানিক চাপড় গ্রামের আরেক ভুক্তভোগী ক্ষিতীশ তির্কী বলেন, গরু বিতরণের তালিকায় আমার যাবতীয় তথ্য দেওয়া রয়েছে। তবে মোবাইল নম্বরটা আমার না। গরু বিতরণ সম্পর্কে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। পরে জানতে পেরেছি, আমার গরু অন্য কেউ নিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির উপদেষ্টা খোন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, তাড়াশ উপজেলায় বিএনপির নাম ভাঙিয়ে আগেও অনেকে অনৈতিক কর্মকাণ্ড করেছেন, এখনো করে যাচ্ছেন। কেউ যদি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেনারি হাসপাতালের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ সুফলভোগীদের তালিকা দিয়েছিলেন। সেই তালিকা অনুযায়ী আমরা গরু বিতরণ করেছি। এখন দেখছি তালিকাভুক্ত দু’জন সুফলভোগী গরু পাননি। এ দায় তাদেরও নিতে হবে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সুফলভোগীদের গরু কারা নিল, তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।