ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের কিশতওয়ার জেলায় বৃহস্পতিবারের ‘মেঘ-বিস্ফোরণে’র কারণে প্রবল বর্ষণ, বন্যা ও ভূমিধসে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ জনে। বার্তা সংস্থা সিনহুয়া শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
স্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, এখন পর্যন্ত ৬০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং এখনো ২০০ জনের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। দুর্যোগে সড়ক ও সেতু ভেঙে বা ভেসে যাওয়ায় এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে আটকে পড়া লোকজনের কাছে পৌঁছাতে উদ্ধারকর্মীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে চাশোটি গ্রামে এই মেঘ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। শ্রীনগরের দক্ষিণ-পূর্বে প্রায় ২৯০ কিলোমিটার দূরের এ গ্রামে মেঘভাঙা বর্ষণে সৃষ্ট ভয়াবহ ভূমিধসে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র ফুটে উঠেছে।
জম্মু-কাশ্মীরে প্রতি বছর কিশতওয়ারের মাতা চণ্ডী হিমালয় তীর্থস্থানে বার্ষিক যাত্রা হয়। এই তীর্থস্থানে যেতে চাশোটি হয়ে যেতে হয়। চাশোটি হলো তীর্থস্থানে যাত্রা শুরুর স্থান। অঞ্চলটি বেশ দুর্গম। এই চাশোটি গ্রামের পর আর গাড়ি যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই। মেঘ বিস্ফোরণে আকস্মিক বন্যার কারণে এবারের বার্ষিক যাত্রা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এক কর্মকর্তা।
এর আগে গত ৫ আগস্ট দেশটির উত্তরাখণ্ডের হিমালয় শহর ধারালিতে মেঘ বিস্ফোরণে একইরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সেখানে অন্তত ৭০ জন মানুষ নিহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হয়। যদিও দেশটির সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে হতাহতের সংখ্যা জানায়নি।
মেঘ বিস্ফোরণ আসলে কী?
মেঘ বিস্ফোরণের ইংরেজি শব্দ ‘ক্লাউড ব্রাস্ট’। এটি একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সাধারণত কোনো জায়গায় হঠাৎ ভারী মেঘ জমে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হলে সেটিকে ‘মেঘ বিস্ফোরণ’ বলা হয়। মেঘ বিস্ফোরণ হলে আক্রান্ত স্থানে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়। যেটির পানি নিম্নাঞ্চলের সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়।