রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২৫, ০৪:১৪ পিএম

ভিডব্লিউবি’র ১০ হাজার বস্তা চাল গুদামে, চার মাসেও হয়নি বিতরণ

বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২৫, ০৪:১৪ পিএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) সুবিধাভোগীদের জন্য বরাদ্দ করা প্রায় ১০ হাজার বস্তা চাল ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা খাদ্য গুদামে চার মাস ধরে পড়ে আছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বারবার নির্দেশনা সত্ত্বেও এই চাল বিতরণ না করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা আবু বেলাল ছিদ্দিকের বিরুদ্ধে। কর্মকর্তার এমন অবহেলায় একদিকে যেমন গরিব সুবিধাভোগীরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ফিরে যাচ্ছেন, তেমনি গুদামে অতিরিক্ত চাল মজুত থাকার কারণে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারাও চাপে পড়েছেন।

শুধু তাই নয়, ইউএনওর চূড়ান্ত করা তালিকায় নাম পরিবর্তন করে অন্য সুবিধাভোগী অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগও উঠেছে মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এতে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে সুবিধাভোগী, ইউপি সচিব ও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে।

এক সপ্তাহ ধরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে খোঁজ নেওয়া গেছে, গত জুলাই মাসে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আটটি ইউনিয়নে লটারির মাধ্যমে বাছাই করে ভিডব্লিউবির ২ হাজার ৪৫৮ জন সুবিধাভোগীর তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। পরে বদলি হওয়া ইউএনও পলাশ কুমার দেবনাথের সময় থেকে ওই চাল বিতরণের জন্য নির্দেশনা এবং চালের ডিওতে অনুমোদন দেন পরবর্তীতে যোগদান করা ইউএনও মফিজুর রহমান। কিন্তু চার মাস পার হলেও চাল বিতরণ হয়নি।

অভিযোগ উঠেছে, ইউএনও মফিজুর রহমান কয়েক দফায় মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে চাল বিতরণ করতে বললেও তিনি কর্ণপাত করছেন না। এ ছাড়া আগের ইউএনওর চূড়ান্ত করা তালিকা থেকে প্রায় ২৫০ জনের নাম বাদ দিয়ে নতুন তালিকায় স্বাক্ষর করানোর চেষ্টা করেছেন আবু বেলাল ছিদ্দিক। নতুন ইউএনও স্বাক্ষর না করে আগের ইউএনওর চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী চাল বিতরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

লটারির মাধ্যমে সুবিধাভোগী যাচাই-বাছাইয়ের পর তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার ঘটনায় মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দু’ওসুও, ধনতলা ও চাড়োল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিব এক মাস আগে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইউএনওর কাছে। অভিযোগের বিষয়ে জবাব চাইলেও সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা।

ইউপি সচিব ও চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লটারিতে বিজয়ী সুবিধাভোগীরা প্রতিদিন ইউনিয়ন পরিষদে আসছেন চাল কবে পাবেন তা জানতে। মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তর থেকে সঠিক নির্দেশনা না থাকায় তারা কোনো জবাব দিতে পারছেন না। ফলে সুবিধাভোগীদের ফিরে পাঠাতে হচ্ছে।

বালিয়াডাঙ্গী খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা শাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, ‘ভিডব্লিউবি কার্যক্রমের আওতায় সুবিধাভোগীদের জন্য উপজেলার ৮ ইউনিয়নের বরাদ্দ করা জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসের ৩০ কেজি ওজনের ৯,৮৩২ বস্তা চাল গুদামে পড়ে রয়েছে। বারবার মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে বলার পরও তিনি চাল বিতরণের উদ্যোগ নিচ্ছেন না। এর মধ্যে নভেম্বরের চালও আসছে। গরিবের চাল আটকে রাখা ঠিক হয়নি। আমরাও নিরুপায়, কিছু করার নেই।’

তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার ঘটনা স্বীকার করে নতুন তালিকায় বদলি হওয়া ইউএনওর স্বাক্ষরের জন্য যোগাযোগ করছেন বলে জানান আবু বেলাল ছিদ্দিক। তিনি বলেন, তালিকায় স্বাক্ষর হয়ে গেলে চাল বিতরণ শুরু হবে। গরিবের চাল এত দিন ফেলে রাখা উচিত কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার কিছু করার নেই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বলেন, ‘বিতরণের জন্য আনা চাল গুদামে ফেলে রাখার সুযোগ নেই। বারবার বলার পরও চাল বিতরণ করেননি মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা। সুবিধাভোগী কেউ লিখিত অভিযোগ করলে মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করবেন বলে জানান ইউএনও।’

বদলি হওয়া ইউএনও পলাশ কুমার দেবনাথ বলেন, ‘সুবিধাভোগীদের তালিকায় পূর্বের তারিখ দিয়ে স্বাক্ষরের প্রশ্নই ওঠে না। লটারিতে যাদের নাম উঠেছে, তারাই চাল পাবে।’

২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় যোগদান করেন মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা আবু বেলাল ছিদ্দিক। যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন অনিয়মের জন্য তিনি গণমাধ্যমের শিরোনামে এসেছেন। আট বছরে সাতজন ইউএনও বদলি হলেও তিনি একই কর্মস্থলে দায়িত্বে রয়েছেন। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী উপজেলা রাণীশংকৈলের মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবেও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।

Link copied!