বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আবু ওবাইদা আরাফাত

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৫, ০৯:১৬ পিএম

আজ বরেণ্য শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হোসেন খানের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী 

আবু ওবাইদা আরাফাত

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৫, ০৯:১৬ পিএম

মোহাম্মদ হোসেন খান। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

মোহাম্মদ হোসেন খান। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

মোহাম্মদ হোসেন খান বাংলাদেশের একজন প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও কলামিস্ট। তিনি ১৯৪০ সালের ১৪ আগস্ট চট্টগ্রামের আনোয়ারার পরৈকোড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ইসমাইল খান ও মাতার নাম ফাতেমা খানম।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় থেকে ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন মোহাম্মদ হোসেন খান। পরবর্তী সময়ে তমদ্দুন মজলিসের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করেছেন। ১৯৫৬ সালে কাজেম আলী স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর ঢাকা আর্ট কলেজে দুই বছর লেখাপড়া করেন। ওখান থেকে এসে ভর্তি হন চট্টগ্রাম কলেজে।’

তিনি ‘৬০-এর দশকের শুরুতে ছাত্র আন্দোলনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬২ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ভর্তি হন অনার্সে। শিক্ষা ও রাজনীতির সমতালে গড়ে ওঠা মোহাম্মদ হোসেন খান ১৯৬২ সালে চট্টগ্রামে প্রথম শহীদ দিবস পালন করতে গিয়ে মুসলিম ইন্সটিটিউট হলে সমাবেশ শেষে মিছিল করার সময় ফেরদৌস আহমদ কোরাইশী, রশীদ আল ফারুকী, মোহাম্মদ নুরুল্লা, মুহসীনসহ তিনিও গ্রেপ্তার হন। তারাই হলেন চট্টগ্রামে প্রথম ছাত্র রাজবন্দি। তখন তিনি ছাত্র শক্তির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে চলে যান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার সময়ে তিনি সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছাত্র শক্তির কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ ডিগ্রি লাভের পর তিনি ঢাকার আবুজর গিফারী কলেজে যোগদান করেন। উক্ত কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সম্পাদক ও অধ্যাপক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে তিনি ঢাকা ছেড়ে চলে আসেন নিজ জন্মস্থান আনোয়ারা কলেজ প্রতিষ্ঠায়। অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে তিনি ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন আনোয়ারা ডিগ্রি কলেজ।

উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে আনোয়ারায় কোনো কলেজ ছিল না। ১৯৮০ সালে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন ফেনীর ছাগলনাইয়া কলেজে। তাঁরই অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ছাগলনাইয়া কলেজ সরকারিকরণ হয়। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তিনি উক্ত কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯২ সালে নগরীর এমইএস কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন।

১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তিনি উক্ত কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান, চট্টগ্রামের হাজী মুহাম্মদ মুহসিন কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও বাংলা বিভাগের প্রধান, নোয়াখালী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক, কুমিল্লার নবাব ফয়েজুন্নেসা সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা করেন।

এরই মধ্যে তিনি কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড ও চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা বিষয়ের প্রধান পরীক্ষক ছিলেন। শিক্ষকতা জীবনে তিনি পূর্ব পাকিস্তান বেসরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দাায়িত্ব পালন করেন। অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হোসেন খান শিক্ষকতার পাশাপাশি শিক্ষা ও সমাজ সেবায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

চাতরী ইউনিয়ন বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, ঝি.বা.শি. উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতিসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত থেকে এলাকায় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিপ্লবে অসামান্য অবদান রাখেন। বাকলিয়ার শহীদ এন.এম.এম. জে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। তিনি কিছু সময় আর্ট ইন্সটিটিউটে (বর্তমান চারুকলা কলেজ) অধ্যয়ন করেন।

কলামিস্ট সাহিত্যিক হিসেবেও তিনি ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছেন। দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় অসংখ্য প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও কলাম লিখেছেন। দৈনিক আজাদী পত্রিকায় দীর্ঘদিন—এক টানা ২২ বছর—  তিনি ইবনে সাজ্জাদ ছদ্মনামে বিরস রচনা নামে সাপ্তাহিক কলাম লিখেছেন। এ ছাড়া বিরস রচনা, কাঙালের বাসিকথা  তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।

সুফিতত্ত্ব বাউল, দেহতত্ত্ব দর্শন ও তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের নিরলস গবেষক ছিলেন অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হোসেন খান। দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও কলামিস্ট অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হোসেন খান। সাধারণ জীবনযাত্রার অসাধারণ মানুষটি ২০১৩ সালের ১৪নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তিনি স্ত্রী, ২ পুত্র ১ কন্যাসহ অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

Link copied!