ঢাকা শুক্রবার, ০৯ মে, ২০২৫

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা

তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি ও কর আরোপের দাবি

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৫, ১১:৪৪ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং সুনির্দিষ্ট কর আরোপের দাবি জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও তামাক নিয়ন্ত্রণকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকালে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, সিগারেটের বর্তমান চারটি মূল্যস্তরকে তিনটি স্তরে নামিয়ে আনলে কর কাঠামো আরও কার্যকর হবে এবং ধূমপানের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।

সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে তামাক করবিষয়ক সংগঠন বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি)। এতে মূল প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন সংগঠনের প্রকল্প কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল। তিনি জানান, প্রিমিয়াম শ্রেণির প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৯০ টাকা নির্ধারণ, উচ্চ স্তরে ১৪০ টাকা অপরিবর্তিত রাখা এবং মধ্যম ও নিম্ন স্তর একীভূত করে নতুন স্তরের মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রতিটি স্তরে ৬৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বহাল রেখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক যৌক্তিক হারে সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপের আহ্বান জানানো হয়। বক্তারা বলেন, এতে করে মূল্যবৃদ্ধির ফলে তামাক কোম্পানির অতিরিক্ত মুনাফা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

বিড়ির ক্ষেত্রে ফিল্টার ও নন-ফিল্টার বিভাজন তুলে দিয়ে ২০ শলাকার খুচরা মূল্য ২৫ টাকা এবং ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়। একইসঙ্গে জর্দার মূল্য ৫৫ টাকা ও গুলের মূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে। ভ্যাট ও হেলথ ডেভেলপমেন্ট সারচার্জ পূর্বের মতোই বহাল রাখার পক্ষে মত দেন বক্তারা।

প্রেস কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দীন ফারুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের পরিচালক ইকবাল মাসুদ এবং একাত্তর টেলিভিশনের প্রতিনিধি সুশান্ত সিনহা।

বক্তারা বলেন, প্রস্তাবিত কর কাঠামো বাস্তবায়ন হলে ২৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপান ছাড়বে এবং ১৭ লাখ তরুণ ধূমপান শুরু করতে নিরুৎসাহিত হবে। এতে ১৭ লাখেরও বেশি অকালমৃত্যু রোধ এবং অতিরিক্ত ৬৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে।

তারা আরও বলেন, তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনায় তামাকপাতা রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক পুনর্বহাল এবং বাজারে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সিগারেট বিক্রির বিরুদ্ধে এনবিআরের কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রায় ৫০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।