শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে ব্যস্ত নগরী ঢাকায় একের পর এক আন্দোলন হচ্ছে। যৌক্তিক কিংবা অযৌক্তিক দাবি যা-ই হোক, সবাই নেমে আসছেন রাস্তায়। ফলে রাজধানী ঢাকা এখন ‘আন্দোলনের নগরীতে’ পরিণত হয়েছে।
সড়ক অবরোধ করেই যেন আন্দোলনকে স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা চালান আন্দোলনকারীদের। আন্দোলনের চাপে চিড়েচ্যাপ্টা অবস্থা নগরবাসীর। ঘর থেকে বের হলেই যাত্রাপথের স্বাভাবিক রাস্তা যেখানে ১০ মিনিটে পার হওয়া যেত, সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হচ্ছে।
অফিস কিংবা গুরুত্বপূর্ণ কাজের উদ্দেশ্যে বের হওয়া মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। শুক্রবারও (১৬ মে) রাজধানী ঢাকার চিত্র ছিল একই।
গত বুধবার থেকে তিন দফা দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবরোধে কাকরাইল সড়কে যান চলাচল বন্ধ। দ্বিতীয় দিনের মতো আজও তারা সড়কে অবস্থান করছেন।
অন্যদিকে, বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদে বসানোর দাবিতে প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিক্ষোভকারীরা।
এতে গুলিস্তান মাজারের দিকের সড়কের দুই পাশেই সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ঢাকা শহরে বৃহস্পতিবারে এমনিতেই যানবাহনের বাড়তি চাপ ও যানজটে ভোগান্তি বেশি থাকে। তার মধ্যে ঢাকার দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে আন্দোলনকারীদের অবরোধের কারণে আগারগাঁও, মহাখালী, উড়োজাহাজ ক্রসিং, বিজয় সরণি, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, মগবাজার, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মালিবাগ, কাকরাইল মোড়, গুলিস্তান, মতিঝিলজুড়ে তীব্র যানজট দেখা যায়।
অনেক স্থানে আবার যাত্রীদের বাস থেকে নেমে গন্তব্যের উদ্দেশে হেঁটে যেতে দেখা যায়।
ভুক্তোভোগী এক যাত্রী বলেন, ‘এই ভোগান্তি আপনাদের বলে বোঝানোর মতো না। ঢাকা মেডিকেলে যাব বাবাকে দেখতে, মা সেখানে একা, তাড়াতাড়ি যে যাব, তারও উপায় নেই।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সচিবালয়, ডিএনসিসির প্রধান কার্যালয়, বারডেম হাসপাতাল, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, ফায়ার সার্ভিসের প্রধান কার্যালয়সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে এসব এলাকায়, ফলে যানজটে এসব স্থানে পৌঁছাতেও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন অনেকে।
