মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মোহাম্মদপুর থানার কয়েকজন নেতা সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন।
বুধবার (৯ জুলাই) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৫ কার্যালয়ে এনসিপি নেতারা বৈধ দোকানদারদের দোকান ফিরিয়ে দেওয়া ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবিতে স্মারকলিপি দিতে গেলে সন্ত্রাসী হামলা হয়।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন মোহাম্মদ মোস্তাকিম, লুৎফুল কবির সুজন, জাবেদ, শাওন ও সানীসহ অনেকে।
আহতদের অভিযোগ, সেখানে আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের অবৈধ মেয়র আতিকের ঘনিষ্ঠ কুখ্যাত দালাল ও চাঁদাবাজ মাহবুব আলমের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী এনসিপি মোহাম্মদপুর প্রতিনিধিদের ওপর অতর্কিত হামলা ও হত্যা চেষ্টা করে। এ সময় এনসিপির প্রতিনিধিদের একটি রুমে আটকে রেখে দেশীয় অস্ত্রসহ উপর্যুপুরি হামলা চালায় সন্ত্রাসী মাহবুব ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এতে গুরুতর আহত হন মোস্তাকিম, কবীর সুজন, জাবেদ, শাওন, সানীসহ আরও অনেকে। শুধু তাই নয় এসময় এনসিপি নেতৃবৃন্দের কাছে থাকা মোবাইল, মানি ব্যাগ ও নগদ অর্থ ছিনতাই করে তারা।
আহতদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হসপিটালে ভর্তি করা হয়। উল্লেখ্য চাঁদাবাজ মাহবুবের নেতৃত্বে একই গ্রুপ চাঁদাবাজিতে বাধা দেওয়ায় মোহাম্মদপুর জামায়াত ইসলামীর নেতাকর্মীদের ওপরও প্রকাশ্যে হামলা চালায়। দেশের অনেক গণমাধ্যমের সামনে জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করার পরও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তারা আরও জানান, মাহবুব আওয়ামী লীগের আমল থেকেই সিটি করপোরেশনে আতিকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন তদবির ও টেন্ডার বাণিজ্যে তাকে সবসময় দেখা যায়। মোহাম্মদপুর অঞ্চলের ময়লার চাঁদা, ফুটপাতসহ চাঁদাবাজির এক স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছে মাহবুব। পাঁচ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এই মাহবুব স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় তারা এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।
অভিযোগ রয়েছে, মোহাম্মদপুরে কৃষি মার্কেটে মেয়র আতিকের সময় থেকেই অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে চাঁদাবাজি করে আসছিল মাহবুবের নেতৃত্বে এই গ্রুপটি। পূর্বে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর আসিফসহ এখানের চাঁদা তুললেও ৫ আগস্টের পর মাহবুবের নেতৃত্ব নতুন সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে, যারা নিয়মিত মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁদা তোলে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলেই নেমে আসে সন্ত্রাসী হামলা এবং মামলা বাণিজ্য।
আহতরা বলেন, ‘আমরা অবিলম্বে এই সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় মোহাম্মদপুরবাসীদের নিয়ে চাঁদাবাজ ও দখলবাজদের বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :