রাজধানীর খিলক্ষেত ক্যান্টনমেন্ট ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাসিত সাত্তারের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে একদল দুষ্কৃতিকারী মিথ্যা ও পরিকল্পিত অপপ্রচার চালিয়ে তার সুনাম ক্ষুণ্নের অপচেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। প্রশাসনের এই সৎ, নির্ভীক ও শৃঙ্খলাবান কর্মকর্তা যখন ঘুস, দালাল এবং সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করলেন, ঠিক তখনই চক্রান্তকারীরা নিজেদের দোষ স্বীকার করেছেন।
ঘটনার পেছনের বাস্তবতা
বাসিত সাত্তার দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই দালালদের দৌরাত্ম্য ঠেকানো, ঘুস-নির্ভর ফাইল প্রসেসিং বন্ধ এবং জনবান্ধব ভূমি অফিস গড়ে তোলার কার্যক্রম শুরু করেন। এতে অস্বস্তিতে পড়ে যায় একদল সুবিধাভোগী অসাধু চক্র, যারা বিগত সময়ে ভূমি অফিসের প্রতিটি স্তরে সিন্ডিকেট বানিয়ে কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্যে লিপ্ত ছিলেন।
এই চক্রটি দ্রুতই তার বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর পোস্ট এবং কিছু কথিত অনলাইন পোর্টালে ‘নামধারী রিপোর্ট’ ছড়িয়ে দেয়। উদ্দেশ্য ছিল একটাই তাকে সরিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ আবারও প্রতিষ্ঠা করা।
মুচলেকার মাধ্যমে ষড়যন্ত্রের স্বীকৃতি
সর্বশেষ এসিল্যান্ডের নেতৃত্বে প্রশাসনিক তৎপরতা ও স্থানীয় মানুষের প্রতিক্রিয়ার মুখে এই অপপ্রচারকারী চক্রই স্বীকার করে নেয় তাদের দোষ। সরকারি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত মুচলেকা দিয়ে ক্ষমাও চেয়েছে।
তারা লিখিতভাবে বলেন, আমরা বিভ্রান্ত হয়ে ভুল তথ্যের ভিত্তিতে এসিল্যান্ড সাহেবের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাই। বাস্তব সত্য এটি নয়। আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকবো। এই মুচলেকা দলিল একটি নির্ভেজাল প্রমাণ, যা এখন এসিল্যান্ড সাহেবের সততা, সাহসিকতা ও জনসেবার প্রমাণ হিসেবে রেকর্ডভুক্ত থাকবে।
বাসিত সাত্তারের অফিস সহকর্মীরা বলেন, উনি নিয়মের বাইরে একচুলও যান না। তার মতো অফিসারই বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে পারে। মিথ্যা অপবাদ শুনে আমরা ব্যথিত।
অফিস স্টাফদের অনেকেই মুচলেকার ঘটনার পর বলছেন, এটি আইনের প্রতি সম্মান এবং সত্য প্রতিষ্ঠার জয়।
ভূমি অফিসে নিয়মিত যাতায়াতকারী একজন সেবাপ্রত্যাশী বলেন, আগে দালাল ছাড়া কাজ হতো না। এখন সরাসরি গিয়ে দেখা করা যায়, অফিসার সাহেব নিজেই কথা বলেন। এমন লোকের বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা করলে কার স্বার্থ রক্ষা হয়? এটি একটি পরিচিত চরিত্র হনন কৌশল, যেখানে কোনো সৎ অফিসার অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলে একটি সুবিধাভোগী গোষ্ঠী মিথ্যাচার চালিয়ে তাকে হেয় করতে চায়।
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মতিউর রহমান বলেন, মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে, এসিল্যান্ড সঠিক ছিলেন এবং তাকে অপদস্থ করার পেছনে সুপরিকল্পিত উদ্দেশ্য ছিল। বাসিত সাত্তারের মতো প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমাদের দেশে খুবই প্রয়োজন, যারা সততা, দৃঢ়তা ও জনসেবার চেতনা নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন। এখন সময় এসেছে এই ধরনের ভুয়া অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের। সৎ অফিসারকে হেয় করা নয়, সম্মান জানানোই হোক জাতির কর্তব্য। ভবিষ্যতে যেন আর কোনো সৎ অফিসারকে এভাবে হেনস্তার শিকার হতে না হয়।