উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে আজ দুপুরে ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। একটি প্রশিক্ষণ বিমান স্কুলের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হলে মুহূর্তেই আগুন ধরে যায় ভবনটিতে। এ ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৯ জন, যাদের অধিকাংশই শিশু শিক্ষার্থী।
দুর্ঘটনার পর স্কুল আঙিনায় পড়ে থাকতে দেখা যায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা স্কুলব্যাগ। কিছুক্ষণ আগেও যেসব শিশুরা ব্যাগ কাঁধে স্কুল গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল বাড়ি ফেরার অপেক্ষায়, তাদের অনেকেই আর কখনোই ফিরবে না। কেউ কেউ তখনো ধোঁয়ার মাঝে নিঃশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করছিল, কেউ হয়তো ছটফট করছিল দগ্ধ শরীর নিয়ে।
আহত এক শিক্ষক কাঁপা গলায় বলেন, ‘এটা ঠিক স্কুল ছুটির সময় ছিল। শিক্ষার্থীরা গেটে অপেক্ষা করছিল। কী ঘটছে, তা বোঝার আগেই চারপাশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই দৃষ্টিসীমা কমে আসে। আমি শুধু আগুন দেখতে পাচ্ছিলাম, তারপর ধোঁয়া…’
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, সোমবার দুপুর ১টার কিছু পরেই বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্কুল ভবনে আছড়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গেই ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো ভবনে। বিধ্বস্ত ভবনটিতে তখন বহু শিক্ষার্থী অবস্থান করছিল। ফলে হতাহতের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের অন্তত ৮টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী, বিজিবি এবং বিমানবাহিনীর সদস্যরাও যোগ দেন উদ্ধারকাজে। হেলিকপ্টারে করে আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। অনেককে ভর্তি করা হয়েছে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, স্থানীয়রা কাঁদছেন, স্বজনদের খুঁজছেন। সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে শোকের ছায়া। মানুষ দগ্ধ শিক্ষার্থীদের সুস্থতা কামনায় প্রার্থনায় মগ্ন।