রাজধানীর উত্তরায় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের সেই ভয়াল ঘটনার ১২ দিন পর রোববার (৩ আগস্ট) সীমিত পরিসরে খুলেছে মাইলস্টোন কলেজ। তবে আজকের দিনে হচ্ছে না কোনো পাঠদান কার্যক্রম। নিঃশব্দ শোকযাত্রার মতো শ্রেণিকক্ষে ফিরেছেন নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৩ আগস্ট) মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সরেজমিনে ঘুরে দেখা এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল ১০টা থেকে কলেজের মূল ফটক দিয়ে শিক্ষার্থীরা ভেতরে ঢুকছে। তবে নেই কোনো কোলাহল কিংবা হৈ-হুল্লোড়। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ শুরু হয় মিলাদ মাহফিল, শোক ও স্মরণসভা। এতে অংশ নিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক, অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীরা। এ ছাড়া শ্রেণিকক্ষগুলোতেও কিছু কিছু শিক্ষার্থীদের বসে থাকতে দেখা গেছে।
রবিউল ইসলাম নামে একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, ক্যাম্পাসে পা রাখতেই চোখে পানি এসে গেল। এই মাঠে একসঙ্গে কত হাসিখুশি সময় কেটেছে আমাদের। আজ সব স্তব্ধ। আমার সহপাঠীরা আর ফিরে আসবে না ভাবতেই বুকটা ভার হয়ে আসে।
কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল বলেন, শিক্ষার্থীরা যেন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে, এ জন্যই সীমিত পরিসরে ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কলেজে এসে শিক্ষকদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময়ের সুযোগ পাবে, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাবে। মানসিক প্রশান্তি ফিরে পেতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
তিনি বলেন, কলেজে আজও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বাহিনীর সহায়তায় একটি চিকিৎসা ক্যাম্প চালু আছে, যেখানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কলেজের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে কাউন্সেলিং চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ চাইলে ব্যক্তিগতভাবে একান্ত আলাপের সুযোগও পাচ্ছেন। শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষক সমাজের পারস্পরিক সহানুভূতি ও মানবিকতা এই সংকটময় সময়ে কলেজের বড় শক্তি হয়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পর মাইলস্টোন কলেজ কর্তৃপক্ষ তিন দফায় ছুটি ঘোষণা করে। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কলেজটি ২ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ ছিল। এর মধ্যেই চালু ছিল প্রশাসনিক কার্যক্রম, আহতদের সহায়তায় গঠন করা হয় একটি কন্ট্রোল রুম।