ঢাকা বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫

মৌচাকে বেজমেন্টে দুই মরদেহ, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

মেডিকেল প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৫, ০৬:০৪ পিএম
নিহত জাকির হোসেন ও মিজানুর রহমান। ছবি- সংগৃহীত

রাজধানীর মৌচাকে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পার্কিংয়ে থাকা একটি প্রাইভেটকারে জাকির হোসেন ও মিজানুর রহমান নামে দুই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তাদের পরিবার দাবি করেছে এটি হত্যাকাণ্ড। 

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে তাদের লাশ নিতে আসেন স্বজনরা। তবে পুলিশ বলছে, এখনও হত্যাকাণ্ডের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তদন্ত চলছে।  

পুলিশ বলছে, প্রাইভেটকারটি ভাড়ায় চালিত। তারা রোববার (১০ আগস্ট) ভোর সকালে ওই হাসপাতাল থেকে একজন রোগী নিতে ঢাকায় আসেন। পরে গাড়িটি হাসপাতালে বেজমেন্টের পার্কিংয়ে রাখার পর আর বের হয়নি। এমন পরিস্থিতি দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুরে গাড়িতে দুই জনের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। 

রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম ফারুক বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে হত্যাকাণ্ডের কোনো আলামত পেলে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। 

তবে, মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে লাশ নিতে এসে স্বজনরা অভিযোগ করেন, এটি পরিকল্পিত হত্যা।

জাকিরের পরিবার জানায়, দুই বছর আগে আমেরিকা যাওয়ার জন্য পল্টনের একটি ট্রাভেল এজেন্সিকে দালালের মাধ্যমে ২৫ লাখ টাকা দেন জাকির। আমেরিকা পাঠাতে ব্যর্থ হলেও এজেন্সি টাকা ফেরত দেয়নি। চলতি মাসের ১০ আগস্ট টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর পরদিনই উদ্ধার হয় জাকির ও তার বন্ধুর মরদেহ।

জাকিরের বাবা মো. আবু তাহের বলেন, টাকা ফেরতের দাবিতে চাপ দেওয়ায় আগেও জাকিরকে মারধর করা হয়েছিল। তাদের ধারণা, ট্রাভেল এজেন্সি সংশ্লিষ্টরাই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।

মিজানুরের ভাগনে জানান, মিজানুর মাছের খামারের ব্যবসা করতেন, কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল না। জাকির প্রাইভেটকার চালাতেন এবং প্রায়ই মিজানুরকে সঙ্গে নিতেন। শনিবার রাতে তারা গাড়ির মালিক ও মালিকের স্ত্রীর ভাইকে (শ্যালক) নিয়ে গ্রাম থেকে ঢাকায় আসেন। তার শ্যালক সেদিন রাতে বিদেশে গেছেন। পরদিন গ্রামের এক রোগীকে হাসপাতালে দেখে ফেরার কথা ছিল তাদের। এরপর কী ঘটেছে, কেউ জানে না।

গাড়ির মালিক জানান, রোববার ভোরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক আত্মীয়কে দেখতে আসেন। পরে একা চলে গেলেও চালক জাকির ও মিজান গাড়িতেই ছিলেন।

ডিএমপির রমনা জোনের ডিসি মাসুদ বলেন, সিআইডিসহ বিশেষজ্ঞ দল তদন্ত করছে, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ চলছে। ময়নাতদন্তের পর ও তদন্ত শেষে এটি হত্যাকাণ্ড নাকি অন্য কিছু তা পরিষ্কার হবে।

এদিকে মরদেহ দুটির ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে জানিয়েছেন রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আওলাদ। তিনি বলেন, মরদেহ দুটির ময়নাতদন্ত চলছে। এ প্রক্রিয়া শেষ হলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। 

গতকাল সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুরে হাসপাতালের বেজমেন্টে থাকা গাড়িটি থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে রমনা থানার পুলিশ। নিহতদের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিলে।