ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ঢাকায় মন্দির নিরাপত্তার ৩০ রাউন্ড গুলি গায়েব, ওসি প্রত্যাহার ও বরখাস্ত ৭

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫, ০৫:৪১ পিএম
বাড্ডা থনা। ছবি- সংগৃহীত

রাজধানীর বাড্ডার নিমতলির শ্রী শ্রী মহাদেব আশ্রম ও কালী মন্দিরে পুলিশের ডিউটিরত সদস্যদের মালামালসহ ৩০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে এবং প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা।

মঙ্গলবার ভোর সাড়ে চারটা থেকে সাড়ে পাঁচটার মধ্যে মন্দিরের প্রাঙ্গণে ডিউটিতে থাকা পুলিশ সদস্যরা নির্মাণাধীন ভবনের দোতলায় অবস্থান করছিলেন। সে সময় তারা ঘুমিয়ে থাকায় চোরেরা সুযোগ নিয়ে চারটি ব্যাগ, দুটি মানিব্যাগ ও তিনটি মোবাইল চুরি করে নিয়ে যায়। এর মধ্যে একটি ব্যাগে ছিল ৩০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি।

চুরির ঘটনা জানাজানি হলে সকালের দিকে মন্দিরসংলগ্ন একটি পতিত জমি থেকে ওই ব্যাগগুলো উদ্ধার করা হয়। গুলিগুলো অক্ষত অবস্থায়ই ফিরে আসে। সন্দেহভাজন তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠে। ডিএমপি গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. তারেক মাহমুদ জানান, ঘটনাটি স্পষ্টতই দায়িত্বহীনতার প্রমাণ। এ কারণে বাড্ডা থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাশাপাশি এসআই মোবাশ্বির, একজন এএসআই এবং পাঁচজন কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ঘটনার পর থেকেই এটি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। মন্দিরের মতো ধর্মীয় ও জনসমাগমপূর্ণ স্থানে দায়িত্বে থাকা বাহিনীর কাছ থেকে কীভাবে অস্ত্র ও সংবেদনশীল সরঞ্জাম চুরি হতে পারে, তা নিয়ে চলছে সমালোচনা।

ডিউটিরত সদস্যদের ঘুমন্ত অবস্থায় নিরাপত্তা দুর্বল হয়ে পড়েছিল-এ বিষয়টিকেও গুরুতর ত্রুটি হিসেবে দেখা হচ্ছে। অস্থায়ী কক্ষে থাকার কারণে পর্যাপ্ত সুরক্ষা ছিল না, যা এ ঘটনার অন্যতম কারণ হতে পারে।

সামাজিক ও নিরাপত্তা দিক থেকেও ঘটনাটি তাৎপর্যপূর্ণ। ধর্মীয় স্থানে পুলিশি গাফিলতির কারণে জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে পুলিশের ওপর আস্থার প্রশ্নে নতুন করে সন্দেহ জন্মেছে। তাই প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও দীর্ঘমেয়াদে নিরাপত্তা কাঠামো পুনর্মূল্যায়ন ও নতুন প্রটোকল প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

এই চুরির ঘটনা শুধু একটি ব্যর্থতার চিত্র নয়, বরং এটি পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাকে উন্মোচিত করেছে। এখন জরুরি ভিত্তিতে তদন্তের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়াই হবে প্রধান লক্ষ্য।