জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার দু’সপ্তাহ পর নতুন করে বড় ধরনের আলোচনার জন্ম দিয়েছে আরও একটি ঘটনা।
গতকাল রাতে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) যৌথ তদন্ত দল রাজধানীর দিলকুশায় অবস্থিত অগ্রণী ব্যাংকের দুটি লকার জব্দ করে।
জব্দ করা লকার দুটি থেকে ৮৩২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধারের কথা জানিয়েছে সিআইসি।
এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর (বুধবার) পূবালী ব্যাংকের মতিঝিল করপোরেট শাখায় হাসিনার নামে থাকা একটি লকার জব্দ করা হয়।
সিআইসি জানায়, জব্দকৃত ১২৮ নম্বর লকারটির দুটি চাবির একটির মালিক শেখ হাসিনা।
ব্যাংকটিতে হাসিনার নামে ১২ লাখ টাকা এবং শেখ রেহানার সঙ্গে যৌথ হিসাবে আরও ৪৪ লাখ টাকা জমা রয়েছে বলে সিআইসি আরও জানায়।
এ ঘটনার এক সপ্তাহ পর, ১৭ সেপ্টেম্বর (বুধবার), এনবিআর শেখ হাসিনার নামে অগ্রণী ব্যাংকের ৭৫১ ও ৭৫৩ নম্বর দুটি লকার জব্দ করে।
এনবিআর সূত্র জানায়, কর ফাঁকি ও আর্থিক অনিয়মসংক্রান্ত অভিযোগ যাচাই করতে লকার জব্দের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এনবিআর ও দুদকের তদন্ত দল জানিয়েছে, উদ্ধার করা স্বর্ণালঙ্কারসহ জব্দকৃত নথিপত্রের বিস্তারিত পরীক্ষা–নিরীক্ষা চলছে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করছেন, এসব লকারের তথ্য ভবিষ্যৎ তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এদিকে লকার জব্দ ও লকারের ভেতর থেকে পাওয়া সম্পদ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা–সমালোচনা। বিশ্লেষকদের মতে, লকারে পাওয়া সম্পদ দেশের শিক্ষা খাতে খরচ করা উচিত অথবা এই সম্পদ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারকে দিয়ে দেওয়া উচিত।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার তীব্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে, প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপরই সারা দেশে তার নামে একের পর মামলা করা শুরু হয়। এসব মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন