ঢাকা শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫

প্রেমের ফাঁদে ফেলে অন্তরঙ্গ ভিডিও করে টাকা আদায়ে আশরাফুলকে হত্যা: র‍্যাব

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২৫, ০২:১৩ পিএম
আশরাফুল হককে হত্যা করে মরদেহ ২৬ খণ্ড করে ড্রামে রাখা হয়। ছবি- সংগৃহীত

রংপুরের ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইলের উদ্দেশ্যে ঢাকায় এনে হত্যা করার অভিযোগে শামিমা ও জরেজকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারণ থেকে শুরু করে ২৬ খণ্ডে মরদেহ গুমের চেষ্টার চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে র‍্যাব-৩।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৩ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, আশরাফুল হককে হত্যা করে মরদেহ ২৬ খণ্ড করে ড্রামে ফেলে রাখার ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি এসেছে।

র‍্যাব-৩ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফায়েজুল আরেফিন জানান, শুক্রবার রাতে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শামিমাকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করেছে, জরেজ ও শামিমা মিলে ১০ লাখ টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করে। এরপর প্রেমের ফাঁদে ফেলে আশরাফুলকে ঢাকার শনির আখড়ায় নিয়ে আসে। পরে চেতনানাশক ব্যবহার করে আশরাফুলের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে জরেজ। কিন্তু টাকা আদায় না করেই কেন তাকে হত্যা করা হলো সেই ঘটনা উদঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র‍্যাব।

র‍্যাব-৩ অধিনায়ক জানান, গত ১১ নভেম্বর রংপুর থেকে ঢাকায় আসেন কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হক। এদিন রাতে জরেজ ও আশরাফুলের সঙ্গে ঢাকার শনিরআখড়ার নূরপুর এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন শামীমা। সেখানে ব্ল্যাকমেইলের উদ্দেশ্যে আশরাফুলকে মালটার শরবতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। তিনি অচেতন হওয়ার পর জরেজ বাইরে থেকে শামীমা ও আশরাফুলের অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারণ করেন।

শামীমার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, ১২ নভেম্বর দুপুরে আশরাফুল পুরোপুরি অচেতন হয়ে পড়লে জরেজ তাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং মুখে স্কচটেপ লাগায়। এরপর ইয়াবা সেবন করে মাদকাসক্ত জরেজ হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে তাকে হত্যা করে। পরদিন সকালে জরেজ বাজার থেকে চাপাতি ও দুটি ড্রাম এনে লাশ ২৬ টুকরো করে ড্রামে ভরে। দুপুরে একটি সিএনজি ভাড়া করে ড্রামগুলো বাসা থেকে বের করে, পরে মাঝপথে সিএনজি পরিবর্তন করে হাইকোর্টের মাজার গেটের কাছে পৌঁছায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখে তারা ড্রাম দুটি রাস্তার পাশের গাছতলায় ফেলে দ্রুত পালিয়ে সায়েদাবাদ যায়। সেখান থেকে জরেজ শামীমাকে কুমিল্লায় নিজ বাড়িতে চলে যেতে বলে।

র‍্যাব-৩ অধিনায়ক আরও জানান, ১৩ নভেম্বর হাইকোর্টসংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের সামনে ড্রাম থেকে আশরাফুলের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গতকাল ১৪ নভেম্বর ঘটনার মূলহোতা জরেজকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। একই দিন শামিমাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।