ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রদলের দুই নেতার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত দুই নেতা হচ্ছেন ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক উল্লাস মাহমুদ ও ইবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাব্বির হোসে।
গত ঈদুল আজহার ছুটি শেষে পুনরায় দোকান খুললে তারা প্রথমে দেখা করতে বলে। এবং পরবর্তীতে বড় ভাইয়ের জন্য কিছু টাকা চেয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ আহাদের। অভিযুক্ত দুজন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদের অনুসারী হিসেবেই ক্যাম্পাসে পরিচিত।
জানা যায়, রবীন্দ্র নজরুল কলা ভবনের বিপরীত পাশে একটি ছোট দোকান চালান আব্দুল্লাহ আহাদ। ঈদের আগে দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি থাকায় তার দোকানের বেশিরভাগ মাল নষ্ট হয়ে যায়, এজন্য পরবর্তীতে তিনি আর সহসাই দোকান চালু করতে পারেননি। এরপরে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা উল্লাস তাকে দেখা করতে বলে এবং দোকান না করলে দোকান ছেড়ে দিতে বলে। দোকান ছেড়ে দিতে অস্বীকৃতি জানালে ছাত্রদল নেতা উল্লাস তাকে বড় ভাইয়ের জন্য কিছু টাকা দিতে বলে।
ভুক্তভোগী দোকানি আহাদ বলেন, ঈদের বন্ধের সময় আমাকে একদিন উল্লাস ভাই ফোন দিয়ে বলে তুমি আমার সঙ্গে দেখা করিও। তো আমি কিছুদিন পর ওনার সঙ্গে দেখা করি। ওনি তখন বলেন যে, তুমি কি দোকান ছাড়বা। আমি বললাম যে, ভাই আমি ছাড়বো না, বন্ধের পর দোকান চালু করবো। পরে বললো যে আচ্ছা ঠিক আছে। আমার সঙ্গে একদিন দেখা করিও। এরপর একদিন দেখা করি কিন্তু কিছু বলে নাই।
তিনি আরও বলেন, আজকের হঠাৎ দুপুর একটার দিকে উল্লাস ভাই আর সাব্বির ভাই দোকান এসে বাইরে নিয়ে যায়, তারপর বলে যে বড় ভাইয়ের জন্য কিছু টাকা দিতে। বললাম, আমি কিছু আগেই দোকান খুললাম এখন তো টাকা নেই। তারা বলে পরের বুধবারের দিন আমরা আসবো। তুমি টাকা রেডি করে রাখিও, কোন সমস্যা হইলে ভাই দেখবেনে। কিন্তু কত টাকা দিতে হবে সেটার পরিমাণ বলে নাই। বলছে যে বড় ভাই আসলে তখন দিয়ে দিও।
অভিযোগের ব্যাপারে ইবি ছাত্রদলের কর্মী ও ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক উল্লাস মাহমুদ বলেন, তার কাছে টাকা চাওয়ার ব্যাপারে আমি কোনভাবেই জড়িত না, তাকে আমি চিনিও না। সে যদি সরাসরি প্রমাণ দিতে পারে যে আমি তার দোকানে গিয়েছি, তাহলে সে যা বলবে আমি মাথা পেতে নিবো। তবে আমি এ বিষয়ে কোন কিছু জানিও না আর আমি যাইনি কোথাও। ঠিক কি কারণে সে এই অভিযোগ আনছে সেটাও আমার জানা নেই। হতে পারে কোন একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার সম্মান নষ্ট করার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন।
ইবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাব্বির হোসেন বলেন, এটা সম্পূর্ণ একটা মিথ্যাচার ছড়ানো হচ্ছে। আমি আজ সকালে ক্যাম্পাসে গিয়েছিলাম তারপর আমি আমাদের সভাপতির সঙ্গে দেখা করে ঝিনাইদহে চলে আসছি দুপুরে। রবীন্দ্র নজরুলের সামনে যে ঘটনার কথাটা আপনি বলছেন সেদিকে আমি যাইনি। এটা হতে পারে কোনো নির্দিষ্ট পক্ষের ষড়যন্ত্র।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, এই ঘটনার ব্যাপারে আগে পরে কিছুই জানি না আমি। কয়েকজন সাংবাদিকের মাধ্যমে জানলাম যে, ছাত্রদলের দুজন নাকি টাকা চেয়েছে। যদি তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত দুজনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থার সুপারিশ করা হবে।