প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধীনে অনার্সে ভর্তি কার্যক্রমে যুক্ত রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে আবারো অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন না হওয়ায় এবং প্রশাসক অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াসের অসুস্থতার কারণে ২০ জুলাইয়ের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ সম্ভব হয়নি।
এর আগে গত ৯ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর সাত কলেজের অন্তর্বর্তী প্রশাসন জানিয়েছিল, ২০ জুলাইয়ের মধ্যে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় ভর্তি কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে যাচ্ছে।
এতে নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরুর সময়ও বিলম্বিত হতে পারে। ফলে শিক্ষার্থীরা পড়বেন সেশনজটে।
প্রশাসক অসুস্থ, ভর্তি কার্যক্রম অপ্রস্তুতি
সাত কলেজের অন্তর্বর্তী প্রশাসক ও ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস সম্প্রতি দুই দফা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রথমে তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি ছিলেন, পরে এক বেসরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা নেন। বর্তমানে তিনি বিশ্রামে রয়েছেন।
ঢাকা কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক পারভীন সুলতানা হায়দার বলেন, ‘প্রিন্সিপাল অসুস্থ থাকায় বিজ্ঞপ্তি আজকেও দেওয়া যাচ্ছে না। প্রস্তুতির কাজও এখনো শেষ হয়নি।’0
তিনি আরও জানান, ‘অধ্যাপক ইলিয়াসের এনজিওগ্রাম করানোর প্রয়োজন নেই বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন এবং আশা করা হচ্ছে তিনি ৩-৪ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠবেন।
ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ও আবেদন ঘিরে অনিশ্চয়তা
এদিকে রোববার (২০ জুলাই)-এর মধ্যে অনলাইনে আবেদন শুরু করার কথা থাকলেও সেটিও সম্ভব হচ্ছে না। চলতি মাসের বাকি ১০ দিনের মধ্যেও ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে অধ্যাপক পারভীন সুলতানা হায়দার বলেন, ‘কবে নাগাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। এ বিষয়ে প্রশাসকই সিদ্ধান্ত জানাতে পারবেন।’
আসন কমানো নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা
সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আসন সংখ্যা যৌক্তিকভাবে কমানোর দাবি জানিয়ে আসছেন। অতিরিক্ত ভর্তি হলে শ্রেণিকক্ষে স্থান সংকুলানসহ মানহীন শিক্ষার আশঙ্কা করছেন তারা।
তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবারো সনাতন পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হবে এবং সিলেবাস বা আসনে তেমন কোনো পরিবর্তন হবে না।
এই বক্তব্যের পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে ইউজিসি ও সাত কলেজের অন্তর্বর্তী প্রশাসনের মধ্যে আসন কমানো নিয়ে এক দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে এখনো এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
এ বিষয়ে উপাধ্যক্ষ পারভীন সুলতানা বলেন, ‘আসন কমানো বা অন্যান্য বিষয় নিয়ে কাজ শেষ হয়নি। আরও একটি সমন্বয় সভা হওয়ার কথা রয়েছে। তারপরই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা যাবে।’
আবেদনকারীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
জানা গেছে, ঢাবির অধিভুক্ত থাকা অবস্থায় সাত কলেজে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একবার ভর্তি আবেদন শুরু হয়েছিল। ৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত চলা আবেদন কার্যক্রমে প্রায় ৩৮ হাজার আবেদন জমা পড়ে। পরে তা স্থগিত করা হয়।
এই শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পূর্বে আবেদন করা শিক্ষার্থীদের জন্য অপশন দেওয়া হবে- তারা চাইলে আবেদন বহাল বা বাতিল করতে পারবেন।
সাত কলেজে মোট আসন সংখ্যা
সাত কলেজে মোট ২৩,৫২৮টি আসন রয়েছে। কলেজগুলো হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ।