২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার দাবিতে নতুন কর্মসূচি দিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১১ অক্টোবর পর্যন্ত সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে সংগঠনটি।
এর আগে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর অর্ধদিবস এবং ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর পূর্ণদিবস কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর সেই কর্মসূচি থেকে সরে এসেছেন তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘আমরা সরকারকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া আদায় করতে চাই। সরকার যদি আমাদের সহযোগিতাকে দুর্বলতা মনে করে তাহলে আগামী ১২ অক্টোবর বাংলাদেশের ইতিহাসে শিক্ষক-কর্মচারীদের সর্ববৃহৎ আন্দোলন দেখতে পাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য বাড়ি ভাড়া আদায় করা, সরকারকে বেকায়দায় ফেলা নয়। সরকার কাজ শুরু করেছে এবং মাউশি থেকে ইতোমধ্যে হিসাব সংগ্রহ করেছে। সরকারকে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার লক্ষ্যেই আমরা কর্মবিরতির কর্মসূচি স্থগিত করেছি। কাজ না করে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করা হলে ১২ অক্টোবর লাখ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়ে প্রেসক্লাবে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু হবে।’
মহাসমাবেশ থেকে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে বাড়ি ভাড়া ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেই প্রস্তাবনা অনুযায়ী, একটি সার-সংক্ষেপ তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট। জোটের এ প্রস্তাব আমলে নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কাছে বেতনের তথ্য সংগ্রহ করেছে মন্ত্রণালয়। তবে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এখনো তথ্য সংগ্রহ করা হয়নি।
মাউশি থেকে দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, শুধু স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের ২০ শতাংশ হারে বছরে বাড়ি ভাড়া দিতে ২ হাজার ৩৫১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা প্রয়োজন। সে হিসাবে প্রতি মাসে ১৯৬ কোটি টাকা লাগবে। ১৫ শতাংশ হারে এক বছরে বাড়ি ভাড়া দিতে ১ হাজার ৭২৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা লাগবে। সে হিসাবে প্রতি মাসে ১৪৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকার মতো লাগবে।
১০ শতাংশ হারে এক বছরে বাড়ি ভাড়া দিতে ১ হাজার ২৬৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা লাগবে। সে হিসাবে প্রতি মাসে ১০৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা লাগবে। ৫ শতাংশ হারে এক বছরে বাড়ি ভাড়া দিতে ৯৭৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা লাগবে। সে হিসাবে প্রতি মাসে ৮১ কোটি ৩০ লাখ টাকা লাগবে।
আরও বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া শতকরা হারে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য মূল বেতনের শতকরা ২০ শতাংশ (ন্যূনতম ৩ হাজার) এবং শতকরা ১৫ শতাংশ (ন্যূনতম ২ হাজার), ১০ শতাংশ (ন্যূনতম ২ হাজার) ও ৫ শতাংশ (ন্যূনতম ২ হাজার) হারে বাড়ি ভাড়ার মাসিক ও বার্ষিক আর্থিক সংশ্লেষের বিবরণী টেবিল আকারে উপস্থাপন করা হলো। এই প্রস্তাব এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।