চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয়েছে জাতীয় রোবটিক্স ও প্রযুক্তি উৎসব— ‘MIE Robolution 1.0’।
এ উপলক্ষে আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয় রঙিন হয়ে উঠেছিল প্রযুক্তির উচ্ছ্বাসে। আধুনিকতা, উদ্ভাবন আর সৃজনশীলতায় মেতেছিলো পুরো ক্যাম্পাস।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকালে এ উৎসব শুরু হয়। চলবে আগামী ১০ মে পর্যন্ত। মেকাট্রনিক্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং (এমআইই) বিভাগের উদ্যোগে এ উৎসব চলছে।
দেশের ৪১টি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে প্রায় ৭ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন এই প্রযুক্তি-পার্বণে।
সকালের মৃদু রোদে শুরু হয় এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। বিভাগের সামনে থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে গিয়ে থামে চুয়েটের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে। হাতে হাতে পোস্টার, পতাকা আর উৎসবমুখর স্লোগানে মুখর ছিল পুরো চুয়েট।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, ‘রোবটিক্স শুধু একটি প্রযুক্তি নয়, এটি ভবিষ্যতের শ্রমবাজারকে রূপান্তর করছে। যান্ত্রিক কাজে রোবট ব্যবহৃত হলেও সৃজনশীলতা ও মানবিক গুণাবলী আজও সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।’
‘রোবোলিউশন ১.০’-তে রয়েছে নানা প্রতিযোগিতা ও কার্যক্রম— রোবো সকার, লাইন ফলোয়িং রোবট, ক্যাড ডিজাইন, প্রজেক্ট শোকেস, দাবা এবং সবচেয়ে আকর্ষণীয় ‘টেকাথন’— যা সরাসরি যন্ত্র এবং সফটওয়্যার সমন্বিত দেশের প্রথম হ্যাকাথন।
আজকের দিনে ছিল রোবটিক্স ও প্রযুক্তিভিত্তিক একটি সেমিনার, যেখানে বক্তারা শিল্প-কারখানায় রোবটের ব্যবহার, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং আগামী দিনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। শিক্ষার্থীরা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন প্রতিটি বক্তব্য, প্রশ্নোত্তরে ছিল তাদের সরব অংশগ্রহণ।
আগামীকাল ৯ মে হবে লাইন ফলোয়িং রোবট, সকার বট এবং টেকাথন প্রতিযোগিতা। আর শেষ দিন ১০ মে অনুষ্ঠিত হবে প্রজেক্ট উপস্থাপন, ক্যাড ডিজাইন প্রতিযোগিতা এবং দাবা খেলা। এই উৎসব পুরস্কার বিতরণী ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
এমআইই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. প্রসঞ্জীত দাশ বলেন, ‘এই উৎসব কেবল প্রতিযোগিতা নয়, বরং দেশের তরুণদের উদ্ভাবনী চিন্তা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা ও প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর একটি প্ল্যাটফর্ম। আমরা চাই প্রযুক্তিপ্রেমী শিক্ষার্থীরা যেন বাস্তব সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসে।’
তিনি আরও জানান, ‘দেশের স্বনামধন্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকেও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা অংশ নিচ্ছেন, এবং সেমিনার ও আলোচনার মাধ্যমে গড়ে উঠবে শিল্প ও শিক্ষার মধ্যে এক সেতুবন্ধন।’
পুরস্কারের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে মোট ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
আপনার মতামত লিখুন :