২০২৭ সাল থেকে আবারও নতুন একটি শিক্ষাক্রম চালু করতে যাচ্ছে সরকার। প্রাথমিকভাবে মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ শ্রেণিতে এই শিক্ষাক্রম চালু করা হবে। পরে তা ধাপে ধাপে সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে সম্প্রসারিত হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এনসিটিবির তথ্যমতে, নতুন শিক্ষাক্রম হবে অভিজ্ঞতালব্ধ, জ্ঞাননির্ভর এবং বাস্তবভিত্তিক। তবে পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি কেমন হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং নতুন কারিকুলাম তৈরিতে বিভিন্ন দেশের শিক্ষাক্রম যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
এ নিয়ে গত ২৫ জুন এনসিটিবিতে এক বৈঠকে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার ও বোর্ডের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
জানা গেছে, আগামী জুলাইয়ে কারিকুলাম বিষয়ে একটি কর্মশালাও অনুষ্ঠিত হবে।
এনসিটিবির সচিব সাহতাব উদ্দিন জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দেখে সময়োপযোগী শিক্ষাক্রম তৈরি করা হবে। এই শিক্ষাক্রমে বাস্তবমুখী শিক্ষা ও হাতে-কলমে শেখানোর ওপর গুরুত্ব থাকবে।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সাতবার শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে ২০১২ সালে চালু হওয়া ‘সৃজনশীল পদ্ধতিতে’। এরপর ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় চালু হয় আরেকটি নতুন শিক্ষাক্রম, যা মুখস্থনির্ভরতা কমিয়ে কার্যক্রমভিত্তিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়।
তবে অভিভাবকদের সমালোচনা এবং শিক্ষার্থীদের কার্যকর অংশগ্রহণে ঘাটতির কারণে সেই শিক্ষাক্রম বিতর্কিত হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর সেই শিক্ষাক্রম বাতিল করে পুরোনো সৃজনশীল শিক্ষাপদ্ধতি পুনর্বহাল করা হয়।
এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের শিক্ষাক্রমে কিছু সময়োপযোগী বিষয় থাকলেও সেগুলোর বাস্তবায়নে ঘাটতি ছিল। নতুন শিক্ষাক্রমে ২০১২ ও ২০২৩ সালের ইতিবাচক দিকগুলো সমন্বয় করা হবে।
তবে ২০২৭ সালের শিক্ষাক্রমের চূড়ান্ত রূপরেখা নির্ভর করবে পরবর্তী নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত রাজনৈতিক সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ও সিদ্ধান্তের ওপর।