প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলোকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করে পত্র জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন-২ অধিশাখার উপসচিব মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার স্বাক্ষরিত এক পত্রে বলা হয়েছে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ এবং একটি স্বাস্থ্যবান, মাদকমুক্ত জাতি গঠনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট সমূহকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত রাখতে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃঢ় সমর্থন ও সদয় নির্দেশনা কামনা করা হয়েছে।
এমতাবস্থায়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে প্রাপ্ত আধা-সরকারি পত্রটি প্রেরণপূর্বক পত্রের মর্মানুযায়ী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটসমূহকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এদিকে প্রাইমারি ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে দেওয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব তার পত্রে বলেন, তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি মারাত্মক হুমকি। একইসঙ্গে, দেশের অর্থনীতির ওপরও এর নেতিবাচক প্রভাব অত্যন্ত স্পষ্ট।
দি টোব্যাকো অ্যাটলাস-এর ২০১৮ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর তামাকজনিত রোগে প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। ২০১৭ সালের Global Adult Tobacco Survey অনুযায়ী ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী জনসংখ্যার ৩৫.৩% ধূমপান বা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করে থাকেন।
স্বাস্থ্য সচিব বলেন, তামাক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সরকার ২০০৫ সালে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন এবং পরবর্তীতে এর অধীনে বিধিমালা প্রণয়ন করে। উক্ত আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী, সরকারি দপ্তর হিসেবে শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটসমূহকে ধূমপানমুক্ত রাখার আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
স্বাস্থ্য সচিব বলেন, শিক্ষার্থীরাই আমাদের ভবিষ্যৎ এবং শিক্ষকগণ সেই ভবিষ্যৎ নির্মাণের কারিগর। সাধারণ ধূমপানের অভ্যেস থেকেই শিশু-কিশোর-যুবারা ক্ষতিকর অন্যান্য আসক্তির দিকে ধাবিত হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম জাতি গঠনে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এই প্রেক্ষাপটে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগাধীন শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটসমূহকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করে প্রশিক্ষণকালে প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, এ উদ্যোগ প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি তাদের ব্যক্তিগত অভ্যাসেও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়ক হবে। প্রশিক্ষণ শেষে তারা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ধূমপানমুক্ত রাখার প্রয়াসে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারবেন।
উল্লিখিত কার্যক্রমসমূহের বাস্তবায়ন ও মনিটরিং নিশ্চিতকল্পে জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট পরিদর্শনকালে বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ এবং পরিদর্শন প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনা প্রদান করা যেতে পারে। সার্বিক বিবেচনায়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ এবং একটি স্বাস্থ্যবান, মাদকমুক্ত জাতি গঠনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটসমূহকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত রাখতে আপনার দৃঢ় সমর্থন ও সদয় নির্দেশনা কামনা করছি।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন