গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ছাত্রদল, বাগছাসসহ বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে, ভোটের দিন দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসাররা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের ভাষ্য, তাদের চোখে মোটাদাগে কোনো অনিয়ম ধরা পড়েনি। নির্বাচনকে তারা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য বলেই মনে করছেন।
এবারের ডাকসুতে ১০ জন রিটার্নিং অফিসারের মধ্যে ৮ জনই ছিলেন বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলের মধ্যে ১৬টি হলের প্রাধ্যক্ষই সাদা দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এছাড়াও, অধিকাংশ হলের রিটার্নিং অফিসাররাও সাদা দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে।
এ বিষয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের রিটার্নিং অফিসার ও সাদা দলের কলা অনুষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বলেন, ‘আমার চোখে কোনো অনিয়ম ধরা পড়েনি। শিক্ষার্থীরা সেখানে অতিরিক্ত ভোট কাস্টের অভিযোগ করলেও আমরা কোনো ভোট জালিয়াতির প্রমাণ পাইনি।’
সাদা দলের বিবৃতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সাদা দল একটা নিউজের ওপর ভিত্তি করে এ বিবৃতি দিয়েছে। তারা বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে। তারা কোনো অনিয়মের অভিযোগ তোলেনি।’
ফজলুল হক মুসলিম হলের রিটার্নিং অফিসার ও সাদা দলের আরেক নেতা সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তানভীর রহমান বলেন, ‘রোকেয়া হল ও অমর একুশে হলের দু-একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া মোটাদাগে কোনো অনিয়ম হয়নি। হল সংসদে যারা বেশি ভোট পেয়েছেন ডাকসুতে তারাই জয়লাভ করেছেন৷ হলের ভোটের একটা প্রতিফলন ডাকসুতেও দেখা গেছে। এতে বোঝা যায় কোনো কারচুপির ঘটনা ঘটেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভোট গণনার সময় আমরা যখন ব্যালট বিন্যস্ত করছিলাম, তখন সেখানে উপস্থিত প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট, সাংবাদিক ও হলের প্রভোস্টরা বুঝেছিলেন ফলাফল কী হবে। পরবর্তী সময়ে সেটাই দেখা গেছে। ভোট গণনার পুরো প্রক্রিয়া সিসিটিভির মাধ্যমে সরাসরি দেখানো হয়েছে। ভোট গ্রহণের আগে সাংবাদিকদের সামনে ব্যালট বাক্স সিলগালা করা হয়েছে। তাই এখানে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই।’
সুর্যসেন হলের রিটার্নিং অফিসার ও সাদা দলের কলা অনুষদের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘নির্বাচনে সবকিছুই উন্মুক্ত ছিল। সবার সামনেই সবকিছু হয়েছে। ঠিকমতো ভোট কাস্টিং হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ও ব্যালট পেপারের মধ্যেও কোনো ধরনের ভারসাম্যহীনতা ঘটেনি। প্রতিটি কার্যক্রম অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’
শেখ মুজিবুর রহমান হলের রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. শেখ মু. ইউসুফ বলেন, ‘আমি একবাক্যে বলতে পারি নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হয়নি। অন্তত আমার চোখে ধরা পড়েনি। নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে।’
উদয়ন কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. তারিক মনজুর বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কেন্দ্রীয়ভাবে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যই আমাদের বক্তব্য। আমার এর বাইরে বিশেষ কিছু বলার নেই।’