দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। ভোট গণনা দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা পর অবশেষে শেষ হয়েছে। ফলাফল প্রকাশ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ভোর ৪টার দিকে ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়। চাকসুর ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রশিবির–সমর্থিত সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের ইব্রাহিম হোসেন রনি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একই প্যানেলের সাঈদ বিন হাবিব নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থী আইয়্যুবুর রহমান তৌফিক এজিএস ৭ হাজার ১৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
ফলাফলে ইব্রাহিম হোসেন রনি ৭ হাজার ৯৮৪ ভোট পেয়ে ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। জিএস পদে সাঈদ বিন হাবীব নির্বাচিত হয়েছেন ৮ হাজার ৩১ ভোট পেয়ে। এছাড়া ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থী আইয়্যুবুর রহমান তৌফিক এজিএস ৭ হাজার ১৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
ভিপি ইব্রাহিম রনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ সেশনের ইতিহাস বিভাগ শিক্ষার্থী, জিএস সাঈদ বিন হাবিব ২০১৯-২০ সেশনের ইতিহাস বিভাগ শিক্ষার্থী। অপরদিকে, এজিএস আইয়্যুবুর রহমান তৌফিক ২১-২২ সেশনের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ বিভাগের শিক্ষার্থী।
চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার আগে থেকেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ অনুষদের মিলনায়তন। ফলাফলে নিজেদের পছন্দের প্রার্থী ও প্যানেলের নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন তারা। শিক্ষার্থীরা স্লোগান, গান আর উল্লাসে মুখর করে তোলেন পুরো ঘোষণাকেন্দ্র।
এসময় ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘তুমি ও জানো, আমি ও জানি, আমরা সবাই বাংলাদেশি’, ‘চাকসু চাকসু’, ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘আমার দেশ, আমার দেশ, বাংলাদেশ’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’- এমন নানান স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে পুরো অডিটরিয়াম।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল ৪টায়। দিনভর ক্যাম্পাসে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের সামনে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকেরা সারা দিন অবস্থান করেন। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ উৎসবের আমেজে ভরে ওঠে।
তবে ছাত্রদলসহ কয়েকটি প্যানেল অভিযোগ করেছে—কিছু কেন্দ্রে সইবিহীন ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে এবং অমোচনীয় কালি উঠে মুছে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। এ ছাড়া ভোটগ্রহণে কিছু অব্যবস্থাপনার কথাও উল্লেখ করেন তারা। তবে এসব অভিযোগ নির্বাচন কমিশন অস্বীকার করেছে।
২৭ হাজার ৫১৮ জন ভোটারের মধ্যে প্রতিটি ভোটারকে সর্বমোট ৪০টি ভোট প্রদান করতে হয়েছে। ২৬টি কেন্দ্রীয় এবং ১৪টি হল সংসদের জন্য। ভোটগ্রহণ হয় ব্যালট পেপারের মাধ্যমে, তবে গণনা চলছে আধুনিক ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিডার) পদ্ধতিতে।
কেন্দ্রীয় সংসদের ২৬টি পদে লড়ছেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর হল ও হোস্টেল সংসদের ১৪টি হল এবং একটি হোস্টেল মিলিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৯৩ জন। নারী প্রার্থীর সংখ্যা ৪৭ জন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন