শনিবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২৫, ০৬:২১ পিএম

জকসু নির্বাচনে প্রার্থীদের মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২৫, ০৬:২১ পিএম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি- সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি- সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন–২০২৫ উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে কঠোর নির্বাচন আচরণবিধি। বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত এই বিধিমালায় প্রার্থী ও ভোটারদের জন্য দেওয়া হয়েছে একাধিক কঠোর শর্ত ও নিষেধাজ্ঞা।

কমিশন জানিয়েছে, আচরণবিধির যেকোনো একটি লঙ্ঘন প্রার্থিতা ও ভোটাধিকার বাতিলের কারণ হবে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও সংঘাতমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করতেই এই বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।

প্রার্থীদের জন্য মূল শর্তাবলি

নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী প্রতিটি প্রার্থীকে একাধিক যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত আচরণবিধিতে উল্লেখ করা হয়েছে নিম্নোক্ত প্রধান বিষয়গুলো হলো:

ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক

প্রতিটি প্রার্থীকে ডোপ টেস্ট বা মাদকাসক্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। কোনো প্রার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলে বা পরীক্ষায় মাদকাসক্ত প্রমাণিত হলে তাঁর মনোনয়নপত্র তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ‘মাদকমুক্ত নেতৃত্বই ছাত্রসমাজের জন্য আদর্শ-এ কারণেই এই নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে।’

ব্যয়ের সীমা নির্ধারণ

  • প্রচারণায় অযৌক্তিক অর্থ ব্যয় ঠেকাতে প্রার্থীদের ব্যয় সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে-
  • হল সংসদে প্রার্থীর সর্বোচ্চ ব্যয়: ৫,০০০ টাকা
  • কেন্দ্রীয় সংসদে প্রার্থীর সর্বোচ্চ ব্যয়: ১৫,০০০ টাকা
  • কোনো প্রার্থীর ব্যয়ের হিসাব এই সীমার বাইরে গেলে তা নির্বাচনী অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং প্রার্থিতা বাতিল করা হবে।

অপরাধমূলক রেকর্ড থাকলে অযোগ্যতা

যে কোনো ফৌজদারী অপরাধ, আর্থিক অনিয়ম, যৌন নিপীড়ন বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাভঙ্গজনিত অপরাধে দোষী প্রমাণিত শিক্ষার্থী নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।

বিশেষ করে যৌন নিপীড়নের অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত হলে আজীবনের জন্য প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করা হবে।

প্রার্থীর ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি ও আচরণ

প্রার্থীদের শালীন আচরণ বজায় রাখা বাধ্যতামূলক। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কোনো প্রকার ভয়ভীতি, হুমকি বা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলে প্রার্থিতা বাতিল করা হবে। এছাড়া নির্বাচনী কার্যক্রমে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে কমিশন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারবে।

প্রচারণায় কঠোর নিয়ন্ত্রণ

নির্বাচনী প্রচারণা যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট না করে এবং অযথা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য কমিশন একাধিক কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে।

পোস্টার, ব্যানার ও দেয়াল লিখন নিষিদ্ধ

  • কোনো প্রার্থী বা সমর্থক পোস্টার, ব্যানার, ডিজিটাল ডিসপ্লে, দেয়াল লিখন, মিছিল বা গণজমায়েত করতে পারবেন না।
  • শুধুমাত্র হ্যান্ডবিল বা প্রচারপত্র ব্যবহার করা যাবে।
  • তবে এ বছর নতুন সংযোজন হিসেবে বলা হয়েছে—
  • নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো প্রকার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
  • এর মধ্যে এআই-নির্ভর ছবি, ভিডিও, গ্রাফিক ডিজাইন, ভয়েস বা টেক্সট ব্যবহার করলে সেটি বিধি লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে।

 বহিরাগতদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ

প্রচারণায় কোনো বহিরাগত ব্যক্তি কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী অংশ নিতে পারবেন না। কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে প্রভাব বিস্তার করলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

প্রার্থীর ছবি ব্যবহারের নিয়ম

  • প্রার্থীরা কেবল নিজেদের ছবি ব্যবহার করতে পারবেন, যার আকার সর্বোচ্চ ৩ ইঞ্চি × ৫ ইঞ্চি।
  • কোনো ধরনের অনুষ্ঠান, মিছিল বা প্রার্থনারত ভঙ্গিমার ছবি ব্যবহার নিষিদ্ধ।

জমায়েতের সীমা

নির্বাচনী প্রচারণায় অনুমতি ছাড়া ২৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী একত্রিত হতে পারবেন না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, এই নিয়ম লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী নির্বাচন থেকে বহিষ্কৃত হবেন।

জবি নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘আমরা চাই একটি শান্তিপূর্ণ, ন্যায্য ও মাদকমুক্ত জকসু নির্বাচন। এজন্যই এবার আচরণবিধিতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এতে প্রভাবশালী গোষ্ঠী কিংবা বহিরাগতদের হস্তক্ষেপও রোধ করা সম্ভব হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. (নাম প্রকাশ হয়নি) বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা রক্ষা করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। নির্বাচন হবে নীতিমালা অনুযায়ী-কোনো অনিয়ম বরদাশত করা হবে না।’

অনেক শিক্ষার্থী এই কঠোর বিধিমালাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, ‘দীর্ঘদিন পর জকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এ ধরনের কঠোর নিয়ম থাকলে মাদকাসক্ত, অপরাধী বা প্রভাবশালী কোনো পক্ষ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।’

তবে কেউ কেউ মনে করছেন, ‘এআই ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা উচিত কি না-সেটা ভেবে দেখা দরকার। কারণ কিছু ক্ষেত্রে এটি ন্যায্য প্রচারণার মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।’

Link copied!