মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ০৩:২৬ পিএম

বেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ কাফির’ বললেন রাবি শিক্ষক

রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ০৩:২৬ পিএম

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান বেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ কাফির’ আখ্যা দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (০৯ ডিসেম্বর) সকালে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক টাইমলাইনে একটি পোস্ট শেয়ার করে ক্যাপশনে তিনি এ ঘোষণা দেন। তার মন্তব্য ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা-সমালোচনা দেখা গেছে।

তার পোস্টটির স্ক্রিনশট শেয়ার করে ফেসবুকে রাকসুর গত নির্বাচনের বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদের প্রার্থী মামুনুজ্জামান স্নিগ্ধ লিখেছেন, নারী শিক্ষার অগ্রদূত রোকেয়া (নট বেগম রোকেয়া) কে যিনি কাফের মুরতাদ বলে পোস্ট করলেন। পবিত্র ধর্মগুলোকে ব্যবহার করে ঐতিহাসিক ভাবেই নারীকে নিপীড়ন, অত্যাচার করা হয়েছে। সেটা চার্চের অত্যাচার কিংবা হিল্লা বিয়ে, দাসী প্রথা সবই হয়েছে ধর্মের নাম ব্যবহার করে। রোকেয়া সে কথাগুলোর বিরুদ্ধেই লিখেছেন।

তিনি আরও লিখেছেন, এই ভদ্রলোক যে বিভাগে শিক্ষকতা করেন ওই একই বিভাগে নারী শিক্ষকও আছেন, ক্যামব্রিজ পড়ুয়া ম্যামও আছেন। অনেক সনাতন মেয়ে শিক্ষার্থী আছেন, হিজাব ব্যবহার করেন না এমন শিক্ষার্থী আছেন। কিংবা ওনার মত-পথের বিরুদ্ধের মানুষ আছেন। এসব মানুষ কী আদৌও এই শিক্ষক সকল নারী শিক্ষার্থীর জন্য নিরাপদ? কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় ধারণার সাথে কী নিরাপদ?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জনপ্রিয় অ্যাক্টিভিস্ট সাদিকুর রহমান খান লিখেছেন, ‘বেগম রোকেয়াকে কাফের আর মুরতাদ বলে গালি দিয়েছেন রাজশাহী ইউনিভার্সিটির এক টিচার। এছাড়াও শাহবাগী টাগি বলে গালিগালাজ তো আছেই। দেখে মজাই লাগে। মানে রোকেয়া এদের কোন লেভেলের ট্রমা দিসেন, চিন্তা করেন। একটা মানুষ প্রায় ১০০ বছর আগে মারা গেছেন, সেই মানুষটারে এখনও গালিগালাজ করা লাগে। এ থেকেই প্রমাণ হয়, বেগম রোকেয়া কতটা সফল ছিলেন।’

শিক্ষকের এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পরমা পারমিতা বলেন, ‘বেগম রোকেয়া ছিলেন উপমহাদেশের নারী শিক্ষা ও মানবিক মূল্যবোধের অন্যতম পথিকৃৎ। তিনি কখনোই ধর্মবিদ্বেষী ছিলেন না; বরং অন্ধ কুসংস্কার, বৈষম্য ও অজ্ঞতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন—যা ইসলামসহ সব ধর্মই সমর্থন করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোনো ব্যক্তিকে এভাবে ধর্মীয় গালি দেওয়া শুধু অসম্মানজনক নয়, অন্যায়েরও নামান্তর। ভিন্ন মত বা প্রগতিশীল চিন্তাকে অপমান করে নয়, যুক্তি ও ইতিহাস বুঝে আলোচনা করাই সভ্যতার লক্ষণ। বেগম রোকেয়ার জন্মদিনে তাকে হেয় করার চেষ্টা তার বিশাল অবদানকে ছোট করতে পারে না; বরং আমাদের নিজেদের সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচয়ই প্রকাশ পায়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান জানান, তিনি সাজিদ হাসান নামের একজনের পোস্ট শেয়ার করে ক্যাপশনে ওই কথাগুলো লিখেছেন। তার দাবি, ‘ওই পোস্ট পড়ে মনে হয়েছে বেগম রোকেয়া ইসলামবিদ্বেষী ছিলেন। সাজিদ হাসানের পোস্টের পুরো লেখাটা পড়লে বেগম রোকেয়ার সেই পরিচয় এসে যায়।’

এমন মন্তব্যের কারণ জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে প্রথমে সাজিদ হাসানের ওই পোস্টটি পড়ার পরামর্শ দেন। পোস্টটি পড়ার পর পুনরায় যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এই পোস্টের লেখাগুলো ভেরিফিকেশনের জন্য বড় আলেমের কাছে যেতে হবে। আপনি বুঝবেন না। আলেমের কাছে গেলেই আপনি বুঝবেন তিনি কাফের বা মুরতাদ ছিলেন কি না!’

বেগম রোকেয়ার অন্য কোনো লেখা পড়েছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, রোকেয়ার লেখা উপন্যাস তিনি পড়েছেন। 

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সাজিদ হাসান নামের ওই ফেসবুক আইডিতে বেগম রোকেয়ার রচনাবলি থেকে ইসলাম সম্পর্কিত বিভিন্ন অংশ খণ্ড খণ্ডভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যা শেয়ার করেই রাবি শিক্ষক এই মন্তব্য করেন।

একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের এমন মন্তব্য ঘিরে এরই মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘এটা তার ব্যক্তিগত অভিমত। এটা অনেকের ভালো লাগবে না। এটা আমি ব্যক্তিগতভাবে এন্ডোর্স (সমর্থন) করি না।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!