জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার বিষয়ে শিগগিরই স্পষ্টতা আসতে পারে- এমন আভাস মিলেছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত ‘ওয়ান টু ওয়ান’ বৈঠক থেকে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেলে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকেই বৈঠক বিষয়ে গণমাধ্যমকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হয়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতির অংশ এবং লন্ডনে অনুষ্ঠিত বিএনপি-প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকের ধারাবাহিকতা।
এই বৈঠক আসন্ন নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্তকরণের দিকেই একটি বড় অগ্রগতি।
অনেকে বলছেন, এটি মূলত লন্ডনে অনুষ্ঠিত প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে হওয়া বৈঠকের ফলোআপ হতে পারে।
এর আগে ১৩ জুন লন্ডনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের পর একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ২০২৬ সালের রমজানের আগেই, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। একইসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, সে সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও বিচারে অগ্রগতি অর্জন করতে হবে।
এরপর ১৫ জুন নির্বাচন কমিশনে এক ব্রিফিংয়ে সিইসি জানান, সরকারের সঙ্গে এখনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তবে আলোচনা হলে সরকারের ‘ভাব’ বুঝে কমিশন নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করবে।
এই পটভূমিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। অনেকে ধারণা করছেন, শিগগিরই জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হতে পারে, এমনকি আগামী রোববার ফুল কমিশনের বৈঠক ডেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, আমার মনে হয় প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে অফিশিয়ালি ফেব্রুয়ারির কথা জানিয়েছেন এবং নির্বাচন কমিশন এখন সুবিধাজনক সময়ে তা ঘোষণা করবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন এর আগে ডিসেম্বরের জন্যও প্রস্তুত ছিল, তবে এখন ফেব্রুয়ারির প্রস্তুতির দিকেই যাচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, লন্ডন বৈঠকের পর বলা হয়েছিল, আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে এবং ফেব্রুয়ারি নিয়ে ইঙ্গিতও ছিল। ফলে প্রধান উপদেষ্টা ও সিইসির বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় যে নির্বাচনের তারিখ-এতে কোনো সন্দেহ নেই।
নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণার আগে সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার জন্য রাজনীতিক, পর্যবেক্ষক এবং সাধারণ মানুষের দৃষ্টি এখন নির্বাচন কমিশনের দিকেই। সম্ভাবনা রয়েছে, এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা খুব বেশি দেরি নয়।
আপনার মতামত লিখুন :