মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রুহুল আমিন ভূঁইয়া

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২৫, ১১:৪৬ পিএম

শিল্পী সমিতি থেকে বহিষ্কার নিপুণ

রুহুল আমিন ভূঁইয়া

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২৫, ১১:৪৬ পিএম

নিপুন আক্তার। ছবি: সংগৃহীত

নিপুন আক্তার। ছবি: সংগৃহীত

জালিয়াতির অভিযোগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হলেন ঢাকাই সিনেমার বিতর্কিত নায়িকা এবং আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শেখ সেলিমের আশীর্বাদপুষ্ট নিপুণ আক্তার। অনৈতিকভাবে সমিতির প্যাড ব্যবহার করে মনগড়া বিবৃতি প্রদান করার অভিযোগে গত রোববার কার্যনির্বাহী পরিষদের মিটিংয়ে সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

২০২৪ সালের ১৬ জুলাই শিল্পী সমিতির প্যাড ব্যবহার করে কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে এক বিবৃতি প্রদান করেন নিপুণ আক্তার। সেখানে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক ‘সাবেক’ বলেই উল্লেখ করেন তিনি।

গত ১৭ জুলাই নিজের ফেসবুক ওয়ালে সেটা পোস্টও দেন। এ নিয়ে সে সময় ব্যাপক সমালোচনায় জড়ান তিনি। অনৈতিকভাবে সমিতির প্যাড ব্যবহার করায় মিশা-ডিপজল নেতৃত্বাধীন কমিটি গত বছরের ৩০ জুলাই সমিতির ষষ্ঠ সভায় এ বিষয় উত্থাপিত হলে নিপুণকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

এরপর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে তা তোয়াক্কা করেননি তিনি। তার আগে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ডিপজলকে নিয়ে গণমাধ্যমে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠে এই বিতর্কিত অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে। গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কাজ করায় নিপুণকে নোটিশ দেয় কার্যনির্বাহী পরিষদ। তবে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শেখ সেলিমের একান্ত কাছের মানুষ হওয়ায় কোনো চিঠিই আমলে নেননি নিপুণ। চালিয়ে যান তার সব বিতর্কিত কর্মকাণ্ড। যার পরিপ্রেক্ষিতে অনৈতিকভাবে শিল্পী সমিতির প্যাড ব্যবহার এবং সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগে শিল্পী সমিতি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন নিপুণ আক্তার। এ নিয়ে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে আপাতত বিস্তারিত কিছু না বলতে চাইলেও বহিষ্কারের সত্যতা স্বীকার করেছেন শিল্পী সমিতির সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ডি এ তায়েব।

এ নিয়ে জানতে নিপুণের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠালেও তাতে সাড়া মেলেনি।

বলা দরকার, কোটা আন্দোলন নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে তোপের মুখে পড়েছিলেন নিপুণ। মূলত তিন কারণে সমালোচনায় জড়িয়েছিলেন অভিনেত্রী। প্রথমত, নিপুণ তার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির অফিসিয়াল প্যাড ব্যবহার করে। যেখানে নিজেকে ‘সাবেক’ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কোনো পদবিতে নেই। তাহলে তিনি কীভাবে সমিতির অফিসিয়াল প্যাড ব্যবহারের এখতিয়ার রাখেন অনেকেই তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

দ্বিতীয়ত, এটি হুবহু কপি করা হয়েছিল টেলিভিশনের অভিনয়শিল্পী সংঘের বিবৃতি। সহিংসতাকে এড়িয়ে দেওয়া সে বিবৃতি নিয়েও কম সমালোচনা হয়নি। তৃতীয়ত, নিপুণের বিবৃতিতেও একইভাবে সহিংসতা ও নিহত হওয়ার মতো ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছিল।

এ ব্যাপারে সে সময় হাইকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল ফজল পলাশ বলেছিলেন, ‘নিপুণ আক্তার ক্ষমতায় না থেকেও অনৈতিকভাবে সমিতির প্যাড ব্যবহার করেছেন যা পেনাল কোড ক্রিমিনাল আইনের ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিন হেরেও প্রশংসিত হয়েছিলেন নিপুণ। কেননা বিজয়ী কমিটির প্রধান দুইজনকে নিজ হাতে ফুলের মালা পরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তবে ভেতরে ভেতরে যে নির্বাচিতদের মানতে পারেননি তার প্রমাণ মিলেছে নির্বাচনের প্রায় এক মাস পর। নির্বাচন বাতিল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেছিলেন তিনি।

সেইসঙ্গে সাধারণ সম্পাদক ডিপজলকে ‘অশিক্ষিত’ বলে মন্তব্য করেন। এর প্রতিবাদে গত মে মাসে নিপুণের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে মিছিলের ব্যানারে নায়িকা নিপুণের গলায় জুতার মালার ছবি ব্যবহার করে বেশ কয়েকজন সিনিয়র-জুনিয়র শিল্পী এফডিসিতে মিছিল করেন। নিপুণের বহিষ্কারের খবরে সন্তুষ্ট তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিল্পী বলেন, ‘গত মেয়াদে নিপুণ হেরে গিয়েও শেখ সেলিমের ক্ষমতা ব্যবহার করে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ার দখল করে ছিলেন। এবারও তিনি তাই চেয়েছিলেন। তবে কাজ হয়নি। আদালতে তার মামলা টেকেনি। নিপুণ এফডিসির জন্য অভিশাপ। তার জন্য গোটা শিল্পী সমাজের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এমন শাস্তি তার অনেক আগেই প্রাপ্য ছিল। আমরা নিপুণমুক্ত এফডিসি পেয়েছি।’

নানা ইস্যুতে মাঝে মধ্যেই সমালোচনার মুখে পড়েন এই চিত্রনায়িকা। কখনো শিল্পী সমিতির নির্বাচন কিংবা পদ নিয়ে, কখনো বা ভিন্ন ইস্যুতে। সম্প্রতি মিথ্যাচার করে আরও একবার বিতর্কিত হয়েছেন তিনি। গত ১০ জানুয়ারি সকালে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের বিজি-২০১ ফ্লাইটে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে তার পাসপোর্ট অফলোড করে দেয় ইমিগ্রেশন পুলিশ। নিপুণের নামে মামলা না থাকায় পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আটকের খবর সত্য নয় দাবি করেন অভিনেত্রী। তবে বিমানবন্দরের বেশকিছু ফুটেজে তাকে দেখা যায়। বিগত সরকারের আমলে নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন নিপুণ। বিশেষ করে আওয়ামীপন্থি শিল্পী হিসেবে নাম ওঠে তার। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে ছাত্রদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে নানা নীল নকশার ছক আঁকার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। বর্তমানে দেশে আত্মগোপনে রয়েছেন নিপুণ।

আরবি/জেডআর

Link copied!