রাজনীতির রুপালি পর্দায় উঠে আসছেন এক কালজয়ী কিংবদন্তি। ‘মজলুম জননেতা’ মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর জীবনকে কেন্দ্র করে নির্মিত হতে যাচ্ছে সিনেমা ‘ভাসানী’।
ছবিটি পরিচালনা করবেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড।
কিন্তু ছবির সব প্রস্তুতি এগিয়ে চললেও এক জায়গায় এসে থেমে গেছে গতি। ভাসানী চরিত্রে উপযুক্ত অভিনেতা খুঁজে পাচ্ছেন না নির্মাতা!
এ নির্মাতা জানান, আগামী ১৬ মে ফারাক্কা দিবসকে কেন্দ্র করে সিনেমাটির শুটিং শুরু করার পরিকল্পনা ছিল। সে অনুযায়ী প্রি-প্রোডাকশনের নানা কাজ এগিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এখনো পর্যন্ত ভাসানীর চরিত্রে এমন কাউকে খুঁজে পাননি, যিনি তার অন্তর্নিহিত ব্যক্তিত্বকে পর্দায় জীবন্ত করে তুলতে পারবেন।
একটি গণমাধ্যমকে ডায়মন্ড বলেন, ‘মূল সমস্যা একটাই, ভাসানীর মতো একজন আদর্শবাদী, সংগ্রামী চরিত্রকে ধারণ করার মতো অভিনয়শিল্পী এখনো পাইনি। কাউকে দেখেই মনে হয়নি, এটাই ভাসানী।’
তিনি জানান, মওলানা ভাসানীর চরিত্রে তিন বয়সের তিনজন অভিনেতা অভিনয় করবেন। কিশোর বয়স থেকে শুরু করে বার্ধক্যের সময় পর্যন্ত তার জীবনের নানা অধ্যায় ফুটে উঠবে সিনেমায়।
ভারতের কয়েকজন শিল্পীর সঙ্গে আলাপ করলেও হতাশ হয়েছেন নির্মাতা। তিনি বলেন, ‘বিদেশিদের কারো মধ্যেই সেই আত্মা পাইনি। তাই এখন মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের শিল্পীরাই ভালোভাবে ভাসানীকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে পারবে।’
তবে পরিচিত মুখ নয়, বরং নতুন কাউকে খুঁজে নিতে চান পরিচালক। তার কথায়, ‘যদি এমন কাউকে নিই, যাকে ভাসানীর মতো দেখায় না, তবে দর্শকও গ্রহণ করবে না। আমি চাই দর্শক যেন পর্দায় ভাসানীকেই দেখেন, কোনো অভিনেতাকে নয়।’
সিনেমাটি নিয়ে দীর্ঘদিনের স্বপ্ন নির্মাতার। ২০০৬ সালে ‘নাচোলের রানি’ দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন ডায়মন্ড। যেখানে উঠে এসেছিল কৃষক-নারী নেত্রী ইলা মিত্রের সংগ্রামের গল্প।
সে সময় থেকেই মনে গেঁথে ছিল ভাসানীকে নিয়ে কিছু করার বাসনা। রাজনৈতিক বাস্তবতায় চুপচাপ গবেষণা চালিয়ে গেছেন। এখন বলছেন, ভাসানীকে নিয়ে ছবি করার এখনই সঠিক সময়। তাকে আটকে রাখার আর কোনো শক্তি নেই।
অভিনেতা নির্বাচন নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকলেও নির্মাতা আত্মবিশ্বাসী, শিগগিরই নতুন মুখ খুঁজে পাবেন তিনি। অডিশনের প্রক্রিয়া ঘোষণা করা হবে দ্রুতই।
ভাসানীর গল্প শুরু হবে তার ১৩ বছর বয়স থেকে। ব্রিটিশ শাসন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলনের নানা অধ্যায়ে তাকে দেখানো হবে এই চলচ্চিত্রে।
পরিচালক বলেন, ‘এই সিনেমা শুধু বিনোদনের জন্য নয়, এটি হবে ইতিহাসের দর্পণ। নতুন প্রজন্ম ভাসানীর জীবন দেখে বুঝবে, একজন আদর্শ রাজনীতিক আসলে কেমন ছিলেন।’
এখন অপেক্ষা শুধু একজন ভাসানীর মতো মানুষকে খুঁজে পাওয়ার, যিনি ভাসানী হবেন, অভিনয়ে নয়, হৃদয়ে।