শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ২৩, ২০২৫, ০৮:৫২ পিএম

গাজা গণহত্যায় নিহত ফটোসাংবাদিকের জন্য কানে শোক পালন

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ২৩, ২০২৫, ০৮:৫২ পিএম

গাজা গণহত্যায় নিহত ফটোসাংবাদিকের জন্য কানে শোক পালন

প্রয়াত ফটোসাংবাদিক ফাতিমা হাসুনা। ছবি-সংগৃহীত।

গত ১৫ মে কান চলচ্চিত্র উৎসবে এক মর্যাদাপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে শেষ বিদায় ও সম্মান জানানো হয় প্রয়াত ফটোসাংবাদিক ফাতিমা হাসুনাকে। তাকে নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্র ‘পুট ইয়োর সোল অন ইয়োর হ্যান্ড অ্যান্ড ওয়াক’-এর প্রদর্শনীতে থিয়েটার উপচে পড়ে দর্শকে।

দাঁড়িয়ে সবাই হাততালি দিয়ে শ্রদ্ধা জানান নিহত এই ‘সাহসিনী’কে। অবতারণা হয় একটি আবেগঘন মুহূর্তের।

পরিচালক সেপিদেহ ফারসি জানান, ফাতিমা চেয়েছিলেন কানসের লালগালিচায় হেঁটে নিজের গল্পের প্রিমিয়ারে অংশ নিতে। ইন্টারনেট বিভ্রাট আর যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে ভিডিওকলে ২০০ দিনের কথোপকথনের ভিত্তিতে তৈরি হয় এই ছবি। 

হাসিমুখে ফাতিমা বলতেন ‘এই সময়টাও পার হয়ে যাবে’। কিন্তু বাস্তবতা তাকে ছাড় দেয়নি। 

১৬ এপ্রিল, ছবির নির্বাচনের পরদিনই  তার বাড়িতে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। প্রাণ হারান তিনি,  তার ছোট ভাইবোনসহ পরিবারের ১০ সদস্য।

ফারসি কেঁদে ফেলেন বলতে গিয়ে ‘তাঁকে আমরা হারিয়েছি, কিন্তু তাঁকে মুছে ফেলা যায়নি’। থিয়েটারে দাঁড়িয়ে একে একে ছবির দর্শকেরা মোমবাতি না, হাততালির আলোর মাধ্যমে জানালেন সম্মান। 

ফারসি বলেন, ‘একজন শিশুকে মারা, একজন আলোকচিত্রীকে মারা  এটা কোন সভ্যতা? এখনো বাঁচানোর মতো অনেক শিশু আছে, দ্রুত কিছু করতে হবে।’

চলচ্চিত্রে ফাতিমা বলেন, তিনি স্বপ্ন দেখেন একদিন মুরগির মাংস খাওয়ার, যেদিন তার খাদ্য তালিকায় শুধু চাল আর লবণ। 

যুদ্ধের মধ্যে হাসুনা যেমন ফ্রেমে ধরেছিলেন ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বাবার কোলে হাসিমুখে বসে থাকা এক শিশুকে, তেমনি অন্য এক ছবিতে দেখা যায় এক শিশু রক্তাক্ত রাস্তায় পাইপ দিয়ে পানি ঢেলে পরিবারের ছিন্নভিন্ন দেহাংশ ধুয়ে ফেলছে।

‘তারা ছিল সাধারণ মানুষ’, বলেন ফারসি। ‘বাবা ছিলেন ট্যাক্সিচালক, ফাতিমা ছিলেন ফটোসাংবাদিক, তার বোন ছিলেন চিত্রশিল্পী, আর ছোট ভাই মাত্র ১০ বছরের।’

হাসুনার মৃত্যুর পর কান চলচ্চিত্র উৎসব, সাধারণত রাজনৈতিক ভাষ্য থেকে বিরত থাকলেও, এক বিবৃতিতে তাঁকে স্মরণ করে লিখেছে, ‘এটি একটি ট্র্যাজেডির সামনে একটি ছোট পদক্ষেপ, তবে এই চলচ্চিত্রের প্রদর্শন ফাতিমার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা।’

অভিনেত্রী জুলিয়েত বিনোশ উদ্বোধনী রাতেই তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। ব্রিটিশ নির্মাতা কেন লোচ ‘গণহত্যার সাক্ষী হতে গিয়ে জীবন দেওয়া’ সাংবাদিকদের সম্মান জানানোর আহ্বান জানান। 

একই সঙ্গে উৎসবের রেড কার্পেটে দেখা যায় কেউ কেউ ফিলিস্তিনের পতাকা কিংবা গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের প্রতীক হিসেবে হলুদ রিবন পরে এসেছেন।

‘ফাতিমা লড়েছিলেন ক্যামেরা হাতে। আর তার গল্প ক্যামেরার বাইরেও এখন আলোড়ন তুলেছে বিশ্বজুড়ে।’ -মন্তব্য করেন এক দর্শক।

গত ১৮ মাসে প্রায় ২০০ সাংবাদিক নিহত হন গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণে। এই প্রেক্ষাপটে ফারসির ছবিটি যেন শুধু একটি ডকুমেন্টারি নয়, বরং যুদ্ধ ও মানবাধিকারের এক জীবন্ত দলিল হয়ে উঠেছে।

‘আমরা ভেবেছিলাম ফাতিমা বেঁচে থাকবে, কান-এ আসবে, যুদ্ধ থেমে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা এখন ভিন্ন’  পরিচালক সেপিদেহ ফারসির এই বেদনাতুর কথাই যেন এ উৎসবের অন্তর্নিহিত হাহাকার। 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!