বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২৫, ১১:১১ পিএম

জেনে নিন এআই-এর মতে বাংলাদেশের সেরা ১০ ব্যান্ড 

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২৫, ১১:১১ পিএম

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশের ব্যান্ডসংগীতের ইতিহাস শুরু স্বাধীনতারও আগে, ষাটের দশকের শেষদিকে। তারপর ধীরে ধীরে রক, মেটাল, ফোক আর বিকল্প ধারার গানের ঢেউ এসে গড়েছে এক বিশাল সংগীত আন্দোলন। প্রজন্ম বদলেছে, সুর বদলেছে, তবু কিছু ব্যান্ড রয়ে গেছে ইতিহাসের শীর্ষে। তাদের নিয়ে এবার এআই তৈরি করেছে বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ১০ ব্যান্ডের এক চূড়ান্ত তালিকা।

১. এলআরবি
১৯৯১ সালের ৫ এপ্রিল যাত্রা শুরু করে এলআরবি বা ‘লাভ রানস ব্লাইন্ড’। এর জন্ম মূলত ঘটে আইয়ুব বাচ্চু ‘সোলস’ ছাড়ার পর।  রক সংগীতে নিজস্ব চিন্তা ও গিটার লিডিং-ভিত্তিক সাউন্ড তৈরির লক্ষ্যে তিনি গড়েন এই ব্যান্ড। 

এলআরবি। ছবি- সংগৃহীত

শুরুতে এটি ছিল দেশের প্রথম ‘ডাবল অ্যালবাম’ প্রকাশ করা ব্যান্ড, যেখানে ‘ঘুম ভাঙা শহরে’ বা ‘চলো বদলে যাই’-এর মতো গান রীতিমতো যুগান্তকারী হয়ে ওঠে। এলআরবির শক্ত ভিত তৈরি হয় আইয়ুব বাচ্চু, সাদাদ, স্বপন ও রবিনকে ঘিরে। পরবর্তীতে বারবার সদস্য পরিবর্তন হলেও ‘গিটার ঈশ্বর’ আইয়ুব বাচ্চুর কণ্ঠ আর গিটারে গড়ে ওঠে এক আলাদা সাউন্ড পরিচিতি, যা ব্যান্ডটিকে বাংলা রকের অগ্রভাগে নিয়ে যায়।

২. ওয়ারফেজ
১৯৮৪ সালে যাত্রা শুরু করা ওয়ারফেজ মূলত গঠিত হয় ঢাকার মিরপুর এলাকার একদল তরুণ সংগীতপ্রেমীর হাতে, যারা হেভি মেটাল ও ক্লাসিক রককে বাংলায় নিয়ে আসতে চেয়েছিল। ব্যান্ডটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন বাপি, মীর নাইমুল কমল এবং হেলাল।

ওয়ারফেজ। ছবি- সংগৃহীত

ওয়ারফেজের প্রথম অ্যালবাম প্রকাশ হয় ১৯৯১ সালে, আর এরপরই ‘স্বাধিকার’, ‘অসামাজিক’, ‘মহারাজ’-এর মতো গানের মাধ্যমে তারা হয়ে ওঠে বাংলাদেশের মেটাল বিপ্লবের প্রতীক। ওয়ারফেজ ছিল এমন একটি ব্যান্ড, যারা সংগীতে মৌলিকতা, বাংলা ভাষায় কঠিন গিটার রিফ ও ড্রামিং-সবকিছুকে একত্র করে তৈরি করে এক নতুন ধারার পথ।

৩. আর্টসেল
১৯৯৯ সালে চারজন তরুণ লিঙ্কন, এরশাদ, সাজু এবং সেজান মিলে গঠন করেন আর্টসেল। ব্যান্ডটির মূল লক্ষ্য ছিল ইংরেজি প্রগ্রেসিভ মেটালের আদলে বাংলা গানে নতুন কিছু আনা। কিন্তু তারা কেবল অনুকরণ করেনি, তারা সৃষ্টি করেছে। 

আর্টসেল ছবি - সংগৃহীত

২০০২ সালে ‘অন্যসময়’ অ্যালবামের মাধ্যমে দেশজুড়ে তরুণ শ্রোতাদের হৃদয়ে জায়গা করে নেয় ব্যান্ডটি। এরপর ২০০৬-এ ‘অনিকেত প্রান্তর’ অ্যালবামটি হয়ে ওঠে এক প্রজন্মের প্রেরণা। মেলোডি, ভারী গিটার ও জটিল গীতিকবিতার মাধ্যমে আর্টসেল প্রমাণ করে, গভীর দর্শন ও মেটাল একসঙ্গে সম্ভব।

৪. মাইলস
১৯৭৯ সালে ফরিদ রশিদ, হ্যাপি আকন্দ, হামিন আহমেদ ও শাফিন আহমেদের হাতে জন্ম নেয় মাইলস, যা মূলত একটি ইংরেজি কভার ব্যান্ড হিসেবেই যাত্রা শুরু করে। কিন্তু ধীরে ধীরে তারা বাংলায় গানে ফেরে এবং ১৯৯৩ সালে ‘প্রতিশ্রুতি’ অ্যালবামের মাধ্যমে পুরো দেশের শ্রোতাপ্রিয় ব্যান্ডে পরিণত হয়। 

মাইলস। ছবি- সংগৃহীত

‘ফিরিয়ে দাও’, ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘নীলা’-এসব গান আজও ভক্তদের কণ্ঠে বাজে। দেশের বাইরে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক পরিবেশনা করা ব্যান্ড বললেই চলে মাইলসকে, যারা পপ-রক, সফট রক আর কিছুটা ছন্দময় সুর নিয়ে গড়ে তোলে একটি ধ্রুপদী জনপ্রিয়তা।

৫. অর্থহীন
১৯৯৮ সালে বেজবাদক ও কণ্ঠশিল্পী ‍সাইদুস খালেদ সুমনের (বেজবাবা সুমন) উদ্যোগে যাত্রা শুরু করে অর্থহীন। প্রথমে এটি সুমনের একটি ব্যক্তিগত প্রজেক্ট ছিল, যার নাম ছিল ‘সুমন ও অর্থহীন’। পরে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যান্ড হিসেবে যাত্রা শুরু করে।

অর্থহীন। ছবি- সংগৃহীত

শুরু থেকেই ব্যান্ডটি ছিল ব্যতিক্রম—কোনো চেনা রক কাঠামো নয়, বরং নতুন ধারার মেটাল সংগীত এবং বিকল্প ধারার গান দিয়ে নিজেদের সাউন্ড তৈরি করে তারা। ‘চাইতেই পারো’, ‘নিকৃষ্ট’, ‘গুটি’ এমন সব শিরোনাম ও সাহসী গীতিকবিতায় তারা শ্রোতার অনুভূতিকে আঘাত করেছে। ব্যান্ডটির গানে আত্মজৈবনিক বেদনা, সমাজচেতনা, প্রেম আর রাগের যে বিস্ফোরণ দেখা যায় তা এক অনন্য আবহ তৈরি করে। এটাই অর্থহীন-এর পরিচয়।

৬. শিরোনামহীন
১৯৯৬ সালে বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র মিলে গঠন করেন শিরোনামহীন। প্রথমে কবিতা আর রক সংগীতের মিশ্রণেই তারা নিজেদের প্রকাশ করে। পরে তাদের গান হয়ে ওঠে একধরনের চেম্বার রকের প্রতীক, যেখানে একতারা, সেলো, বেহালার সঙ্গে মিশে যায় আধুনিক রক। 

শিরোনামহীন। ছবি- সংগৃহীত

‘হাসিমুখ’, ‘বন্ধ জানালা’, ‘এই অবেলায়’ এই গানগুলো শুধু জনপ্রিয়তা নয়, প্রেম, দর্শন ও বিদ্রোহেরও প্রতীক হয়ে ওঠে। শিরোনামহীন ছিল একদম ভিন্ন ধাঁচের ব্যান্ড, যারা সাহস করে লোকগান আর ধ্রুপদী যন্ত্রকে নিয়ে এসেছে মূলধারার রকে।

৭. ক্রিপটিক ফেইট
১৯৯৩ সালে ঢাকার ইংরেজি মাধ্যম ব্যাকগ্রাউন্ডের কয়েকজন তরুণ—ইরেশ জাকের, শাকিব, ফারশেদ ও সরফরাজ—মিলে গঠন করেন ক্রিপটিক ফেইট। শুরুতে ব্যান্ডটি ছিল ইংরেজি ভাষার মেটাল ব্যান্ড, যারা মূলত আয়রন মেইডেন কাভার করত। তাদের প্রথম অ্যালবাম ‘এন্ডস আর ফরএভার’ ১৯৯৫ সালে মুক্তি পায়।

ক্রিপটিক ফেইট। ছবি- সংগৃহীত

কিন্তু এরপরই তারা বাংলায় ফেরে, এবং ২০০১ সালের অ্যালবাম ‘শ্রেষ্ঠ’ তাদের ঘুরিয়ে দেয় নতুন পথে—বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস ও শক্তিশালী গিটার রিফে তৈরি এক গর্জনময় ধারা। ক্রিপটিক ফেইট হয়ে ওঠে বাংলাদেশের চিন্তাশীল মেটাল সংগীতের প্রতীক।

৮. চিরকুট

সুমি, পাভেল, ইমন ও নিরব মিলে ২০০২ সালে গঠন করেন চিরকুট। শুরুতে এটি ছিল লোকসংগীত ও কবিতা নির্ভর এক পরীক্ষামূলক সংগীত দল, পরে এটি গড়ে ওঠে পূর্ণাঙ্গ ব্যান্ডে। বেহালা, ধ্রুপদী গিটার আর কণ্ঠসাম্যর জাদুতে তারা তৈরি করেছে 'কানামাছি', 'জাদুর শহর', 'বৃষ্টির গান'-এর মতো গান। 

চিরকুট। ছবি- সংগৃহীত

চিরকুট আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিয়েছে, সিনেমার গানে অভিনব আবহ এনেছে, এমনকি নাটক-চলচ্চিত্রের গল্পকেও নিজেদের গানের মধ্যে মিশিয়ে দিতে পেরেছে। তারা প্রমাণ করেছে, লোক ও আধুনিকের মিশ্রণও জনপ্রিয় হতে পারে—শুধু চাই মেধা।

৯. নেমেসিস
নব্বইয়ের শেষ দিকে ঢাকা শহরের কিছু ইংরেজি রকপ্রেমী তরুণ মিলে গঠন করেন নেমেসিস। বিকল্প রক আর মননশীল গীতিকবিতার মধ্য দিয়ে ব্যান্ডটি এক নিজস্ব ধারা তৈরি করে। ২০০৫ সালে তাদের ‘অন্বেষণ’ অ্যালবাম ও পরে ‘তৃতীয় যাত্রা’ দিয়ে তারা শ্রোতামনে জায়গা করে নেয়। 

নেমেসিস। ছবি- সংগৃহীত

নেমেসিস মঞ্চে নিজেদের সর্বোচ্চ উজাড় করে দেয়। অদ্ভুত এক আত্মবিশ্বাস, উপস্থাপনা আর গভীর গানে তারা হয়ে উঠেছে শহরের তরুণদের কণ্ঠস্বর।

১০. নগর বাউল (জেমস)
১৯৮০-এর দশকে চট্টগ্রামের ‘ফিলিংস’ ব্যান্ড থেকেই শুরু হয়েছিল এই যাত্রা। জেমসের কণ্ঠে যখন ‘স্টেশন রোড’-এর মতো গান বাজতে শুরু করে তখন কেউ ভাবেনি এই ব্যান্ড একসময় হয়ে উঠবে বাংলাদেশের রক-প্রতীক। 

জেমস। ছবি- সংগৃহীত

পরবর্তীতে ‘ফিলিংস’ বদলে হয় ‘নগর বাউল’। একাধারে ব্যান্ড, আবার একাধারে একক শিল্পীর পরিচয়—জেমস নিজেই এই ব্যান্ডের মুখপাত্র। দুঃখ, ভালোবাসা, সমাজের রূপান্তর, জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত সবকিছুর অভিজ্ঞতা ফুটে ওঠে তার কণ্ঠে। তার গান মানেই ‘জীবনের গল্প’।

এই তালিকা শুধুমাত্র জনপ্রিয়তা নয়, বরং সময়কাল, ঘরানা, সাউন্ড পরিবর্তন, ইতিহাস, সাহসী পদক্ষেপ এবং সংগীতিক গভীরতা সবকিছুর সম্মিলিত বিশ্লেষণে গঠিত। এবং এটিই এআই-এর মতে বাংলাদেশের চূড়ান্ত সেরা ১০ ব্যান্ডের তালিকা।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!