আজ থেকে ঠিক আট বছর আগে এই দিনে ঢালিউড হারিয়েছিল তার অন্যতম সোনালি অধ্যায়। কলকাতা ছেড়ে আসা সেই তরুণ আব্দুর রাজ্জাক একদিন হয়ে উঠেন ঢাকার রুপালি পর্দার রাজা, সবার প্রিয় নায়করাজ রাজ্জাক।

১৯৪২ সালের ২৩শে জানুয়ারি কলকাতায় জন্ম নেওয়া এই কিংবদন্তি কিশোর বয়সে মঞ্চে পা রাখলেও টালিগঞ্জের তুমুল প্রতিযোগিতায় নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ পাননি। উত্তম-সৌমিত্রদের সেই সময়ে চলচ্চিত্রে জায়গা পাওয়া যেন ছিল পাহাড় চড়ার মতো কঠিন।
অবশেষে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার উত্তাপে ভিটেমাটি ছাড়তে হয় তাকে, আর এক শুভাকাঙ্ক্ষীর পরামর্শে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে ১৯৬৪ সালে পাড়ি জমান সীমান্তের এপারে।
ঢাকায় এসে শুরু হয় তার জীবনের নতুন অধ্যায়, নতুন লড়াই। প্রথমে টেলিভিশন নাটকে পরিচিতি, তারপর ১৯৬৬ সালে ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ দিয়ে সিনেমায় প্রথম ঝলক। সেই বছরই জহির রায়হানের ‘বেহুলা’তে লখিন্দরের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মন জয় করে নেন।

স্বাধীনতার পর ‘মানুষের মন’ দিয়েই শুরু হয় রাজ্জাক-যুগ; একের পর এক সাফল্যে তিনি হয়ে উঠেন ঢালিউডের ভরসা। পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয় আর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত এই তারকা শুধু নায়ক নন, ছিলেন সময়ের আইকন। বাংলা চলচ্চিত্র পত্রিকা চিত্রালীর সম্পাদক আহমদ জামান চৌধুরী তাকে ‘নায়করাজ’ উপাধি দেন।
আজ তার প্রয়াণদিবসে তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরন করছেন তার ভক্তরা। অনেকেই স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘তার হাসি, তার অভিনয় আর সেই রাজকীয় উপস্থিতি এখনও চোখে লেগে আছে।’

আট বছর পেরিয়ে গেলেও ঢালিউডের আকাশে তার তারকার আলো ম্লান হয়নি। বরং আজকের দিনে তার শূন্যতা যেন আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন