ঢাকাই সিনেমার অনিন্দ্যসুন্দরী নায়িকা সাদিকা পারভিন পপির জন্মদিন আজ। সিনেমাপ্রেমীদের স্বপ্নের এই নায়িকা ১৯৭৯ সালের আজকের দিনে খুলনায় জন্মগ্রহণ করেন। দীর্ঘদিন ধরে চলচ্চিত্রাঙ্গন থেকে দূরে পপি। জীবনের বিশেষ দিনে কথা বলেছেন দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে।
শুভ জন্মদিন!
ধন্যবাদ আপনাকে ও দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ পত্রিকাকে। জীবনের বিশেষ দিনটি অনেক সুন্দরভাবে কাটছে। সবকিছু মিলিয়ে আলহামদুলিল্লাহ।
কেমন আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ, সবার দোয়াতে স্বামী-সন্তান নিয়ে ভালো আছি। সংসার জীবন বেশ উপভোগ করছি।
জন্মদিন কেমন কাটছে?
তেমন পরিকল্পনা ছিল না। তবে স্বামীর পরিবারের সবাই আমাকে সারপ্রাইজ দিয়েছেন। রাত বারোটার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৪টি কেক কেটেছি। কেকের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আগে জন্মদিনে সবসময় মসজিদ-মাদ্রাসায় মিলাত হতো। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। ধানমন্ডির একটি মাদ্রাসায় এতিম শিশুদের সঙ্গে জন্মদিনের আনন্দ ভাগাভাগি করেছি। ওদের সঙ্গে কাটাতে পেরে বেশ ভালো লাগছে। এতিমদের খাওয়ালে দোয়া করবে। এতদিন যাদের খাইয়েছি তারা (মা, ভাই-বোন) এখন গালি দেয়। দিনশেষে এতিম বাচ্চারা দোয়া করে। জন্মদিনে সবার কাছে দোয়া চাই—আমার স্বামী ও সন্তানের জন্য। সবার প্রতি সবসময় আমার ভালোবাসা।
সংসার কেমন কাটছে?
স্বামী ও সন্তান নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আমার নির্ভতার একটা জায়গা হয়েছে। এখন আমার বলার মতো একটা পরিবার আছে। আমার স্বামী অনেক যত্ন নেয়। সবসময় সুখে রাখে। এটাই আমার বড় পাওয়া। সে সর্বোচ্চ দিয়ে আমায় সাপোর্ট করে। যেখানে নিজের পরিবারের সাপোর্ট পাইনি সেখানে সে আমাকে অভাব বুঝতে দেয় না। আমি ভীষণ সুখি।
আর সিনেমায় ফেরা হবে?
দর্শকের কাছে আমি অনেক কৃতজ্ঞ। তারা আমাকে বরাবরই সাপোর্ট করেন। তাদের জন্যই আমি আজকের পপি। তাদের কাছে আমার চাওয়া থাকবে, আগে যেভাবে আমাকে ভালোবাসত সেই ভালোবাসাটা মৃত্যর আগ পর্যন্ত যেন থাকে—সেটা কাজ করি বা না করি। যে ভালোবাসে সে যেকোনো অবস্থান থেকে ভালোবাসে। সবসময় তাদের ভালোবাসায় থাকতে চাই। ভক্তদের ভালোবাসা নিয়েই যেন আমার মৃত্যু হয়।
নির্মাণাধীন সিনেমার ভবিষ্যৎ?
আমার কয়েকটি সিনেমা নির্মাণাধীন রয়েছে। আমার কারণে প্রযোজক-পরিচালকরা বিপাকে পড়েছেন। এ জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সব সিদ্ধান্ত হয় উপর থেকে। যেখানে আমাদের কিছু করার থাকে না। আমরা চাইলেও অনেক সময় অনেক কিছু করতে পারি না। যেভাবেই হোক একটা গ্যাপ হয়েছে। কখনো কাজে ফিরলে ইচ্ছে আছে কাজগুলো করে দেব। যদি কখনো কাজগুলো না করতে পারি তাহলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ থাকবে। তবে ইচ্ছেকৃত নয়, অনিচ্ছাকৃতভাবে হচ্ছে। আমি কখনো মানুষকে বিপদে ফেলিনি। আমার দ্বারা কখনো কারো ক্ষতি হয়নি। যেটাই হয়েছে তা পরিস্থিরি কারণে।
প্রযোজনায় ফিরবেন?
অভিনয় ফেরা হবে কি না জানি না। তবে সামনে প্রযোজনায় আসার চিন্তাভাবনা আছে। আমি আগেও প্রযোজনা করেছি। এখন আবার প্রযোজনা নিয়ে নতুন করে ভাবছি। নিজের পারিবারিক ব্যস্ততা কাটিয়ে কাজ শুরু করব।
শিল্পী সমিতির নির্বাচনে আসবেন?
না আর কখনো নির্বাচনে আসব না। নির্বাচন মানেই দলাদলি। যেখানে পক্ষপাতিত্ব হয় তেমন জায়গায় আর যেতে চাই না। সবার ভালোবাসা নিয়েই থাকতে চাই।
জন্মদিনে উপলব্দি কী?
সংসারে যে সবচেয়ে বেশি সার্পোট করে সে বেশি ভুক্তভোগী হয়। তার প্রমাণ আমি। অবশ্যই পরিবারকে সাপোর্ট করা উচিত তবে, নিজের অবস্থান ঠিক রেখে। নিজের পায়ের মাটি শক্ত রেখে সাপোর্ট করতে হবে। নিজের ক্ষতি করে কিছু করা উচিত নয়। যেমনটা আমার জীবনে হয়েছে। সবার জন্য করতে গিয়ে নিজের জন্য কিছু করতে পারিনি। সবাইকে বলতে চাই, নিজের অবস্থান ঠিক রেখে তারপর সাপোর্ট করতে হবে।