পাকিস্তানের ইসলামাবাদে নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন ১৭ বছর বয়সি জনপ্রিয় টিকটকার সানা ইউসুফ। সোমবার বিকেলে জি-১৩ সেক্টরের বাসায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
পুলিশ জানায়, পরিচিত এক অতিথি সানার বাড়িতে ঢুকে তাকে কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
সুম্বল থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মালিক আসিফ জানান, ‘হত্যাকারী ভিকটিমের পরিচিত, তিনি অতিথি হিসেবেই বাসায় প্রবেশ করেছিলেন।’
সানার মা পুলিশের কাছে দায়েরকৃত অভিযোগে বলেন, ‘ঘাতকের চেহারা পরিষ্কার মনে আছে। সে মাঝারি গড়নের, কালো শার্ট-প্যান্ট পরা ছিল।’ তিনি জানান, ঘটনার সময় তার বোনও সেখানে ছিলেন এবং দুজনেই হত্যার সাক্ষী।
পুলিশ জানায়, বিকেল পাঁচটার দিকে ওই ব্যক্তি বাসায় ঢুকে সানাকে পরপর দুইবার গুলি করেন। এরপর দ্রুত পালিয়ে যান।
এরপর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পাঠানো হয়েছে পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসে (পিআইএমএস)।
সানা ইউসুফ সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। টিকটকে তার ফলোয়ার প্রায় ৮ লাখ, ইনস্টাগ্রামে আরও ৫ লাখের কাছাকাছি। তার ভিডিওগুলোতে সচরাচর থাকত কৃষ্টি-সংস্কৃতি, নারীর অধিকার আর তরুণদের নিয়ে বার্তা।
হাস্যরস আর অনুপ্রেরণামূলক এই ভিডিওগুলো তাকে তরুণদের কাছে পরিচিত করে তোলে। তার মৃত্যুতে অনলাইনে শোকের ছায়া নেমে আসে, হ্যাশট্যাগ ‘#জাস্টিসফরসানাইউসুফ’ দ্রুত ট্রেন্ডিংয়ে উঠে আসে।
পাকিস্তানে নারীদের নিরাপত্তা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় নারীদের উপস্থিতি নিয়ে আগে থেকেই আশঙ্কা ছিল। জানুয়ারিতেই এক বাবা তার মেয়েকে টিকটক ভিডিও বানানোর কারণে হত্যা করে।
দেশটিতে টিকটক ব্যবহারকারী ৫ কোটি ৪০ লাখের বেশি হলেও অ্যাপটি বারবার নিষিদ্ধ করা হয়েছে কন্টেন্ট সংক্রান্ত অভিযোগে। তবে বর্তমানে এটি শর্তসাপেক্ষে চালু রয়েছে।
সানা ইউসুফের নির্ম'ম মৃত্যুর ঘটনা নতুন করে সেই পুরনো ভয়কেই উসকে দিয়েছে। তরুণীদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে এখন আরও উচ্চকণ্ঠ হচ্ছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে মানবাধিকারকর্মীরা।