ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট, ২০২৫

সাংস্কৃতিক হীনম্মন্যতা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান ফারুকীর

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২৫, ১১:৪৯ পিএম
অন্তবর্তীকালীন সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী। ছবি - সংগৃহীত

সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অন্তবর্তীকালীন সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী নিজের মন্ত্রণালয়জীবনের শেষ অধ্যায়ের ইঙ্গিত দিলেন এক আবেগঘন সামাজিক বার্তায়। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন—মানে হাতে সময় মাত্র ছয় মাস। এই প্রেক্ষাপটে ফারুকীর পোস্ট নতুন মাত্রায় গুরুত্ব পাচ্ছে, বিশেষ করে যখন তিনি সরাসরি বলছেন, এখনই সময় সাংস্কৃতিক হীনমন্যতা থেকে বেরিয়ে আসার।

নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বুধবার একটি পোস্টে আহত জুলাই যোদ্ধা মাহবুবুল আলমের ওপর নির্মিত একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য তথ্যচিত্র শেয়ার করেন ফারুকী। সঙ্গে যুক্ত করেন একটি সুদীর্ঘ ক্যাপশন, যা একই সঙ্গে আত্মজৈবনিক, দিকনির্দেশনামূলক এবং রাজনৈতিক তাৎপর্যে পরিপূর্ণ।

সেই বার্তায় বিদায়ের আভাস দিয়ে তিনি জানান, খুব শিগগিরই আয়োজন করবেন একটি প্রেস মিট—‘নোট টু সাকসেসর’। যেখানে তিনি তুলে ধরবেন মন্ত্রণালয়ের চলমান কার্যক্রম, সীমাবদ্ধতা, এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে যাওয়া একটি কালচারাল ব্লুপ্রিন্ট।

তিনি লেখেন, ‘আমার টার্ম শেষ হওয়ার আগে ‘নোট টু সাকসেসর’ নামে প্রেস মিট করে আমার মন্ত্রণালয় কি কি কাজ করেছে সেটা জানাব।’ এই ঘোষণা নিছক কাজের তালিকা প্রকাশ নয়, বরং রিলে রেসের মতো একটি ভাবনা, যেখানে একজন থেমে যাওয়ার আগেই পরেরজন দৌড় শুরু করেন। সেই ধারাবাহিকতাকে সচল রাখতে চাচ্ছেন তিনি।

ফারুকীর দাবি, তার দল কখনো কোনো অলীক বা কল্পনাবিলাসী প্রকল্পে হাত দেয়নি। বরং সময় ও বাস্তবতার বিচারে যা সম্ভব, এবং দীর্ঘমেয়াদে দেশের সংস্কৃতি ও মানসিক কাঠামোতে প্রভাব ফেলতে পারে-সেসব কাজেই মনোযোগ দিয়েছেন। 

এই প্রেক্ষাপটেই তিনি কথা বলেন ‘কালচারাল প্যারাডাইম শিফট’ নিয়ে-যার লক্ষ্য হলো একচেটিয়া রাজনীতি ও সাংস্কৃতিক হীনমন্যতা থেকে বেরিয়ে এসে একটি আত্মবিশ্বাসী, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গঠন।

তার ভাষায়, ‘আমরা জানতাম জুলাই ন‍্যারেটিভ নিয়ে আমাদের নানা মিডিয়ামে, নানা ধাপে কাজ করতে হবে। আমাদের এই স্বল্প সময়ে এটা করাই কঠিন একটা চ‍্যালেন্জ। এর মধ্যে বাস্তবায়ন সম্ভব না- এমন কিছুতে আমরা হাত দিতে চাই নাই।’

পোস্টে উঠে এসেছে ‘ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’ ও ‘কালচারাল ইন্ডাস্ট্রি’ নিয়ে তার ভাবনার কথাও। তিনি জানান, পাঁচ বছরের জন্য একটি পরিকল্পনা রেখে যেতে চান, যা ভবিষ্যতের নীতিনির্ধারকদের জন্য পথনির্দেশ হতে পারে। সেই পরিকল্পনা ‘নোট টু সাকসেসর’-এর অংশ হিসেবেই তুলে ধরবেন তিনি।

রাজনৈতিক পরিবর্তনের সময়বিন্দুতে দাঁড়িয়ে মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর এই পোস্ট কেবল বিদায়বার্তা নয়-বরং একটি দিকনির্দেশনামূলক সাংস্কৃতিক আহ্বান। এমন একটি সময়ে, যখন নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে, তখন তার এই বক্তব্য নতুন করে ভাবতে শেখায়-রাষ্ট্র, রাজনীতি আর সংস্কৃতি কি সত্যিই একে অপর থেকে আলাদা থাকতে পারে?