‘কথা ক’ গানটি দিয়ে গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছিলেন র্যাপার সেজান। সেই গানে ছিল প্রতিরোধ, প্রতিবাদ আর ছাত্রসমাজের অদম্য চেতনার ঝাঁঝ। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই সেজানের কণ্ঠে শোনা গেল হতাশা আর অভিমানের সুর—জুলাই আন্দোলন নিয়ে আয়োজিত কোনো শোতে আর অংশ নেবেন না বলে স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
রবিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে সেজান লেখেন, ‘জুলাই আন্দোলন সম্পর্কিত যেকোনো শো’র ব্যাপারে আমার সাথে কোনো যোগাযোগ করবেন না।’
এরপর তিনি তুলে ধরেন সেই সময়কার বাস্তবতা—‘আন্দোলনে ছাত্রজনতার সমর্থনে সর্বপ্রথম দাঁড়ায় বাংলাদেশ হিপহপ কমিউনিটির র্যাপাররা। আমাদের গ্রাফিতি আর্টিস্টরাও সেখানে মুখ্য ভূমিকা রাখে। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই জুলাই সম্পর্কিত যেসব অনুষ্ঠান হয়েছে, সেখানে র্যাপ বা হিপহপ আর্টিস্টদের প্রাধান্য নেই বললেই চলে।’
তিনি বলেন, ‘অনেক জায়গায় পারফর্ম করেছি। কিন্তু অধিকাংশ জায়গায় মনে হয়েছে, আমরা জোর করে ঢুকে পড়েছি। বাকিদের কথা সবাই ভুলে গেছে। অথচ হিপহপ এখন মুলধারার সংস্কৃতি। এরপরও যথাযথ সম্মান ও সম্মানী এখনো পাওয়া যায় না।’
সেজান আরও জানান, যেসব শোতে তিনি আগেই কথা দিয়েছেন, সেগুলো শেষ করবেন। তবে ভবিষ্যতে শুধুমাত্র এমন আয়োজনে যাবেন যেখানে ‘প্রোপার লাইনআপ’ ও শিল্পীর সম্মান রক্ষা করা হবে।
তার স্পষ্ট বার্তা, ‘শোতে আর্টিস্টের প্রোপার প্রোটোকল দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। অন্যথায় নিজের ও আমার সময় নষ্ট করবেন না।’
সবশেষে র্যাপারের কণ্ঠে ঝরে পড়ে শিল্পীর আত্মসম্মান আর গর্বের ভাষা—‘ক্ষ্যাপা গানের আর্টিস্ট আমরা, ক্ষ্যাপ আর্টিস্ট না। রেস্পেক্ট ছাড়া যারেই পাবি, র্যাপ আর্টিস্ট না।’
এই পোস্ট সামনে আসার পর হিপহপ অনুরাগীদের মধ্যে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, মূলধারার অনুষ্ঠানে হিপহপ কমিউনিটির প্রতি সম্মানজনক আচরণ এখনো প্রতিষ্ঠা পায়নি।