বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের ইতিহাসে আজ লেখা হলো এক অনন্য অধ্যায়। ৩৬ জুলাই উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ের মঞ্চে আজ একই দিনে হাজির হয়েছেন চার প্রজন্মের চার কিংবদন্তি ব্যান্ড সোলস, ওয়ারফেজ, শূন্য ও আর্টসেল।
সকাল ১১টা থেকে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠান যখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যার দিকে এগোচ্ছে, তখন পর্যন্ত ইতোমধ্যে মঞ্চ কাঁপিয়েছে শূন্য। কিছুক্ষণ পরই শুরু হয় সোলসের পারফর্মেন্স। তাদের সবচেয়ে জনপ্রইয় গান ‘কেন এই নিঃসঙ্গতা’ দিয়ে পরিবেশনা শেষ করে সোলস।
বিকেল ৪টা নাগাদ ‘শূন্য’ যখন মঞ্চে উঠে ‘রাজাহীন রাজ্য’ বা ‘গোধুলির ওপারে’ গান গেয়ে ওঠে, তখন শুরু হয় এক আবেগী ঘোর। তবে শেষ গান হিসেবে তারা পরিবেশন করে এমন একটি গান যেটি জুলাই আন্দোলনের অন্যতম স্লোগান হয়ে উঠেছিল। ‘শোনো মহাজন’ নামের এই প্রতিবাদী গানে কণ্ঠ মিলান মানিক মিয়াতে উপস্থিত হাজারো দর্শক-শ্রোতা।
শূন্যের পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনুসের জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ ও জুলাই ডকুমেন্টারি ‘ডু ইউ মিস মি’ শেষে মঞ্চে আরোহণ করেন ভিন্নধারার প্রতিবাদী শিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান।
এরপর ৬টা নাগাদ মঞ্চ দখল করে দেশের ব্যান্ড সংগীতের অন্যতম পথিকৃৎ সোলস। চার দশকেরও বেশি পথচলার এই ব্যান্ড তাদের নরম অথচ সজীব গানের ধারায় দর্শককে ফিরিয়ে নেয় আশি ও নব্বইয়ের রঙিন দিনগুলোয়।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মঞ্চে গান পরিবেশন করছে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় হার্ডরক ব্যান্ড ওয়ারফেজ। রাত ৮টায় আসছে সেই মুহূর্ত, যার অপেক্ষায় রয়েছেন হাজারো রকপ্রেমী। দিনের সর্বশেষ আয়োজন হিসেবে থাকবে আর্টসেল-এর পরিবেশনা।
একই মঞ্চে চারটি ব্যান্ড, চারটি যুগ, চারটি দর্শন। কিন্তু বার্তা একই: গানের মধ্যেই লুকিয়ে আছে জনতার স্লোগান, প্রতিবাদের ভাষা, ভালোবাসার প্রতিধ্বনি।
এটা কেবল কনসার্ট নয়, এ যেন বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের এক মহাসম্মিলন। ৩৬ জুলাইয়ের মঞ্চ তাই আজ ইতিহাসের সাক্ষী, যেখানে গানই হয়ে উঠেছে চেতনার উৎস।
আপনার মতামত লিখুন :