নির্বাচনের আগে গণভোট চেয়ে বাংলাদেশ জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘সোজা আঙুলে যদি ঘি না ওঠে তাহলে আঙুল বাঁকা করা হবে, তবুও ঘি লাগবেই।’ তিনি বলেন, আমরা আপনাদের চালাকি বুঝি। আপনাদের চালাকির ভিত্তিতেই দাবি আদায়ের পন্থাও আমরা আবিষ্কার করব। আমরা এখনো নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলনে আছি। সোজা আঙুলে যদি ঘি না ওঠে, তাহলে আঙুল বাঁকা করব। কিন্তু ঘি আমাদের লাগবেই। সুতরাং যা বোঝাতে চাই বুঝে নিন। নো হাংকি-পাংকি। জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট লাগবেই।’
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ববর্তী সমাবেশে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এ কথা বলেন। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও ওই আদেশের ওপর নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করাসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি ঘোষণা করে জামায়াতসহ আন্দোলনরত আটটি দল। গতকাল বেলা ১১টার দিকে দলগুলো আলাদা আলাদা মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়ে এসে সমবেত হয়।
সমাবেশে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘নির্বাচনের আগে গণভোট হতে হবে। নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পরেও গণভোট করতে আইনি বাধা নেই। এ বিষয়ে সময়ক্ষেপণ অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলবে। সে ক্ষেত্রে নতুন পথ বেরিয়ে আসবে।’ তাহের আরও বলেন, ‘অনেকে গণভোটের ক্ষেত্রে খরচের কথা বলেন। এক দিনে বাংলাদেশে যে পরিমাণ চাঁদাবাজি হয়, সেই টাকা দিয়ে একটা গণভোট করা যায়। তাই গণভোটে টাকার অভাব হবে না।’ জামায়াতের এই নায়েবে আমির বলেন, ‘জামায়াতের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে। কারণ, জামায়াত নির্বাচন, সমাধান, শান্তি, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন চায়। সরকারও দলগুলোকে আলোচনা করতে বলেছে। তবে সরকারকে এ ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করতে হবে। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার জন্য জামায়াত একটি কমিটি গঠন করেছে। অন্য দলগুলোও যাতে আলোচনার জন্য কমিটি গঠন করে। অবিলম্বে আলোচনা শুরু হোক। সময়ক্ষেপণ করা যাবে না।’
আলোচনার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কল করেও পাননি জানিয়ে মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আবারও কল করা হবে। তাকে অনুরোধ করা হবে, বিএনপির পক্ষ থেকেও যাতে আলোচনায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত আসে।’ জামায়াত নেতা তাহের বলেন, ‘আর হিংসা, রাজনৈতিক বিরোধ নয়। জাতি মনে করেÑ মেজর দলগুলো বসে শুধু জুলাই সনদ নয়, আগামী নির্বাচন কীভাবে হবে, সেই বিষয়ে আলোচনা করবে। সেই আলোচনায় নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হবে নাÑ দলগুলোকে এই বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করতে হবে। সেটি টেলিভিশনে সম্প্রচার করতে হবে। জাতির কাছে টেলিভিশনে ওয়াদা করতে হবে কেন্দ্র দখল হবে না। কোনো দল সেটি করলে সেই কেন্দ্রের ভোট বাতিল হবে, এমন ঘোষণা দিতে হবে।’
তাহের বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টাকেও বলতে হবে, নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে সেটি বাতিল করে নতুন করে নির্বাচন দেবেন। এ দেশের মানুষ আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন দেখতে চায় না। সেটি মেনে নেওয়া হবে না। নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে বাংলাদেশ অন্ধকারের দিকে চলে যাবে, শেখ হাসিনার আমল ফিরে আসবে।’ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) তৈরির জন্য নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছে আহ্বান জানান তাহের। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। এরপরও উন্নতি না হলে ১১ নভেম্বর ঢাকা মহানগরী হবে জনতার নগরী। ১১ নভেম্বর হবে, চলো চলো ঢাকা চলো।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন