দিনক্ষণ চূড়ান্ত না হলেও আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতেই হওয়ার কথা ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনেও নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক অঙ্গনে ক্রমেই বাড়ছে আলোচনা-সমালোচনা, জমে উঠছে ভোটের মাঠ। ইতিমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে উপজেলা জামায়াতের আমির এ এস এম মতিউর রহমানকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও উপজেলা সভাপতি মো. রায়হান উদ্দীন একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। কিন্তু সবচেয়ে বেশি আলোচনার বিষয় বিএনপির প্রার্থী কে হবেন?
৩ নভেম্বর বিএনপি ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করলেও, ঝিনাইদহ-১ আসনটি এখনও ঘোষণা করা হয়নি। এই একটি সিদ্ধান্ত থেকেই শৈলকুপার ভোটারদের কৌতূহল আরও বাড়ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি দলের প্রার্থীরা পোস্টার বিলবোর্ড ঝুলিয়ে ভোটপ্রার্থনায় মাঠে নেমে পড়েছেন। গ্রামের চায়ের দোকান, বাজার-ঘাট, পথসভা, আড্ডা সব জায়গায় এখন নির্বাচনের আমেজ। এখানকার ভোটাররা বলছেন, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি মাঠে না থাকায়, বিগত ৩টি নির্বাচনের মতো এবারও হবে একতরফা প্রতিদ্বন্দ্বিতা। তবে সেই একতরফার উত্তাপ তৈরি করছে মূলত বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
ঝিনাইদহ জেলার ৪ আসনের মধ্যে শুধুমাত্র শৈলকুপায় ইতিহাস কিছুটা অন্যরকম। বিগত ১২টি নির্বাচনে এখানে আওয়ামী লীগ জিতেছে ৭ বার, বিএনপি ৩ বার এবং জাসদ ২ বার। এবার আওয়ামী লীগ মাঠে না থাকায় ভোটারদের বড় অংশ মনে করছেন বিএনপি প্রার্থী সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন। তবে প্রশ্নটা এখানেই সেই প্রার্থী ঠিক কারা? জামায়াত ইতিমধ্যেই রঙিন পোস্টার ছাপিয়ে দাঁড়ি-পাল্লা প্রতীকে প্রচারণায় নেমেছে। তারা মনে করছে, বিএনপি যতদিন প্রার্থী ঘোষণা না দিচ্ছে, ভোটের মাঠ ততই তাদের দিকে ঝুঁকছে। কিন্তু তাদের সবচেয়ে বড় ভয়ের নাম সদাচার এবং “ক্লিন ইমেজ” হিসেবে পরিচিত বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু। জয়ন্ত কুমার কুন্ডু বিএনপি থেকে নমিনেশন পেলে বিয়টি ভাবার আছে। আর মাঠে রয়েছেন ২০১৮ নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া, এলাকার প্রিয়জন, সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী, বিএনপির মানবাধিকার স¤পাদক, বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান ২০১৮ সালে ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন। এবারও তাকে প্রার্থী হিসেবে দেখার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না ভোটাররা। সাম্প্রতিক সময়ে ছুটির দিনগুলোতে সরকারি-বেসরকারি প্রোগ্রাম, সামাজিক সংগঠনের আমন্ত্রণে উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় তাকে প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু বিএনপির খুলনা বিভাগের সহ-সাংগঠনিক স¤পাদক। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ধানের শীষের পক্ষে সভা-সমাবেশ করছেন। কমিটির সদস্য আব্দুল ওহাবেরও আশীর্বাদ রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।
এদিকে বিএনপির দুটি গ্রুপই মাঠে থাকলেও এখনও কোনো সহিংসতা ঘটেনি। ভোটারদের মন্তব্য “যাকে দল মনোনয়ন দেবে, তাকেই সমর্থন দেব। শৈলকুপার এই আসনে এবি পার্টি ও এনসিপিও প্রার্থী দিতে পারে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এখন শুধু শৈলকুপাবাসীর অপেক্ষা বিএনপি কাকে দেয় এই আসনের চূড়ান্ত মনোনয়ন?

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন