বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এসএ সোনিয়া

প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৪, ১০:২৬ পিএম

তরমুজের উপকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

এসএ সোনিয়া

প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৪, ১০:২৬ পিএম

তরমুজের উপকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

ছবি সংগৃহীত

তরমুজের মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। তবে এখনো বেশ সহজলভ্য। ঠাণ্ডা তরমুজ গ্রীষ্মকালে বেশ জনপ্রিয়। এতে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে। এই ফলে ৬% শর্করা, ৯২% পানি এবং অন্যান্য উপাদান ২%। এটি ভিটামিন এ সম্বৃদ্ধ ফল।

পশ্চিম আফ্রিকা, উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ আফ্রিকা, নাকি মিসর—কোনটি তরমুজের জন্মভূমি, সেটি নিয়ে বেশি আলোচনা করব না। আজ আমাদের আলোচনার বিষয় তরমুজের পুষ্টিমান, উপকারিতা এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।  চলুন জানা যাক-

পুষ্টিগুণ 

তরমুজে খুব সামান্য ক্যালরি আছে। তাই তরমুজ খেলে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো আশঙ্কা থাকে না। তরমুজের ৯২ শতাংশই পানি। তরমুজে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন ‘এ’ ও ভিটামিন ‘সি’র মতো পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। 

গরম পড়তেই বাজার ছেয়ে গিয়েছে তরমুজে। শরীরে পানির অভাব পূরণ করতে এই ফলের জুড়ি মেলা ভার। পানির অভাব পূরণ করার পাশাপাশি শরীরে নানা খনিজের ঘাটতি মেটাতেও সাহায্য করে তরমুজ।

পুষ্টিবিদেরা বলছেন, যে কোন মৌসুমে যে কোন ফল খাওয়া ভালো। তবে, তরমুজের উপকারিতা কিছুটা হলেও বেশি। তীব্র গরমে ঠান্ডা, শীতল পরশ দেওয়ার পাশাপাশি শরীরে আরও অনেক উপকারে লাগে তরমুজ।

তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা -

১.পানির ঘাটতি পূরণ :

শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো ঠিকমতো কাজ করতে দরকার পর্যাপ্ত পানির জোগান বা শরীরকে সিক্ত রাখা। শরীরের তাপমাত্রার নিয়ন্ত্রণ, দেহের স্বাভাবিক কার্যক্রম, কোষে পুষ্টি প্রবেশের মতো বিষয়গুলো নির্ভর করে পর্যাপ্ত পানি বা তরল গ্রহণের ওপর।

তরমুজে ৯২ শতাংশ পানি রয়েছে, যা দেহের দৈনিক তরলের চাহিদা পূরণে ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।

২.ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখায় সহায়ক :

তরমুজে থাকা ভিটামিন ‘এ’ ও ভিটামিন ‘সি’ ত্বক সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ভিটামিন ‘সি’ ত্বককে কোমল ও চুল শক্ত রাখতে সহায়তা করে। অন্যদিকে ভিটামিন ‘এ’ ত্বকে নতুন কোষ গজানোর পাশাপাশি কোষের ক্ষতিপূরণে সহায়তা করে।

৩.পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ :

তরমুজে ৩০ ক্যালরি, সাড়ে ১১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, দশমিক ৬ গ্রাম আঁশ, ৯.৪ গ্রাম চিনি, দশমিক ৯ গ্রাম প্রোটিন ও দশমিক ২ গ্রাম ফ্যাট রয়েছে।

৪.ক্যানসার রোধে সাহায্য করে :

তরমুজে থাকা কিউকারবিটাসিন ই ক্যানসারযুক্ত কোষগুলোকে অপসারণ করে টিউমারের বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে। তবে এটি নিয়ে এখনো গবেষণা চলমান রয়েছে।

৪.হার্ট সুস্থ রাখতে সহায়তা করে :

তরমুজে রয়েছে ‘সিট্রালিন’। যা আসলে এক প্রকার অ্যামাইনো অ্যাসিড। এটি দেহে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়িয়ে চলা যায়।

৫. প্রদাহ কমাতে পারে

শরীরে দীর্ঘমেয়াদি অনেক রোগের কারণ প্রদাহ। তরমুজে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, লাইকোপেন ও ভিটামিন ‘সি’ প্রদাহ কমাতে সহায়তা করতে পারে। দীর্ঘ দিন ধরে নিয়মিত তরমুজ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।

৬.দৃষ্টিশক্তি লোপ প্রতিরোধ :

চোখের সমস্যা দূর করতে ভিটামিন এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এক টুকরো তরমুজ থেকে প্রায় ৯ থেকে ১১ শতাংশ ভিটামিন এ পাওয়া যায়। চোখ এবং দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে প্রতিদিন ওই পরিমাণ ভিটামিন এ শরীরে গেলেই যথেষ্ট।

৭.হজমে সহায়ক হতে পারে

তরমুজে প্রচুর পানি ও অল্প পরিমাণে আঁশ থাকে। এ দুটিই স্বাভাবিক হজম প্রক্রিয়ার জন্য দরকার।

আঁশ মলত্যাগ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। অন্যদিকে পানি শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থগুলোকে নিষ্কাশনে সহায়তা করে।

৮.শর্করার মাত্রা বজায় রাখে :

তরমুজের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স হল ৮০, যা এক বাটি কর্নফ্লেক্সের সমান। অতএব, তরমুজে ক্যালোরির পরিমাণ যথেষ্ট কম। ডায়াবেটিস রোগীরা মিষ্টিজাতীয় ফল খেতে ভয় পান। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, এই ফলের স্বাদ মিষ্টি হলেও তার গ্লাইসেমিক লোড ৫। যা রক্তে শর্করার উপর তেমন কোনও প্রভাবই ফেলে না।

৯. পর্যাপ্ত লাইকোপেন :

তরমুজের ভিতরের যে লালচে রং, তার উৎস হল এই লাইকোপেন। যা আসলে একটি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই লাইকোপেনের প্রভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। শুধু তা-ই নয়, কিছু ক্ষেত্রে ক্যানসার প্রতিরোধী হিসাবেও কাজ করে এই যৌগ।

১০. অ্যালজাইমার :

তরমুজ মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য, অ্যালজাইমার এবং বিভিন্ন পুরনো রোগের ইনফ্লামেশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

১১.চুলের যত্নে সাহায্য :

তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ থাকার কারণে তরমুজ মথার ত্বক এবং চুলের জন্য খুব উপকারী।

বেশি তরমুজ খাওয়ার সময় কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করুন-

বাজারে এখন প্রচুর তরমুজ পাবেন। লাল টুকটুকে ফালি করা তরমুজ লোভনীয় বটে। কেউ কেউ গরমে তৃষ্ণা মেটাতেও প্রচুর তরমুজ খেয়ে ফেলেন। কিন্তু তরমুজ বেশি খাওয়া কি ঠিক?

একবারে বেশি তরমুজ খেলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। কয়েকটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জেনে নিন:

হজমে সমস্যা :

তরমুজে প্রচুর পানি ও ডায়েটারি ফাইবার থাকে। বেশি পরিমাণে তরমুজ খেলে হজমে গোলযোগ দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ডায়রিয়া, খাবার হজম না হওয়া, গ্যাসের মতো নানা সমস্যা দেখা দেয়। এতে চিনির যৌগ হিসেবে পরিচিত সরবিটল থাকে, যাতে গ্যাসের সমস্যা ও পাতলা পায়খানা তৈরি করে।

গ্লুকোজের স্তর বাড়ায় :

যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে, তাদের বেশি তরমুজ খাওয়া ঠিক নয়। রক্তে চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দেয় তরমুজ। এটিকে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে বিবেচনা করা হলেও এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৭২। কোন খাবারে রক্তে শর্করা কতটা বাড়ে, তা নির্ভর করে তার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এবং গ্লাইসেমিক লোডের ওপর। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৭০-এর বেশি হলে তা উচ্চ মাত্রা, ৫৫-এর নিচে হলে কম মাত্রার। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যত উচ্চ, তা রক্তে শর্করার মাত্রা তত বেশি বাড়ায়। আবার গ্লাইসেমিক লোড ২০-এর বেশি হলে তা উচ্চ, ১১-এর নিচে কম। নিয়মিত তরমুজ খাওয়ার আগে তাই  চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

যকৃতে প্রদাহ

যারা অ্যালকোহল পান করেন, তাদের তরমুজ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বেশি পরিমাণে তরমুজ খেলে তাদের যকৃতে প্রদাহ হতে পারে। এতে প্রচুর লাইকোপেন থাকায় অ্যালকোহলের সঙ্গে বিক্রিয়া করে প্রদাহ তৈরি করে। যকৃতে এ ধরনের প্রদাহ যথেষ্ট ক্ষতিকর।

শরীরে অতিরিক্ত পানি :

বেশি তরমুজ খেলে শরীরে পানির পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে শরীর থেকে সোডিয়ামের পরিমাণ কমে যায়। শরীর থেকে যদি এ পানি বের হতে না পারে, তখন নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে পা ফুলে যাওয়া, ক্লান্ত বোধ করা বা কিডনি দুর্বল হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।

হৃদরোগে ঝুঁকি :

তরমুজে পটাসিয়ামের মাত্রা বেশি থাকে। অতিরিক্ত মাত্রায় পটাশিয়াম শরীরে গেলে হৃদযন্ত্রের নানা সমস্যা, যেমন: অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন, নাড়ির গতি কমে যাওয়ার মতো নানা ঘটনা ঘটে।

গবেষক ও পুষ্টিবিদরা বলেন, ১০০ গ্রাম তরমুজে ৩০ ক্যালরি থাকে। এ ছাড়া প্রতি ১০০ গ্রামে ৬ গ্রাম চিনি থাকে। তরমুজে যেহেতু পানির পরিমাণ বেশি, তাই ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত তরমুজ খাওয়া অনেকের কাছে সহজ মনে হতে পারে। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

   

Link copied!