টাকা ধার দিয়ে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার ঘটনা আমাদের সমাজে নতুন কিছু নয়। প্রাথমিকভাবে বন্ধুসুলভ বা অসহায় ভঙ্গিতে টাকা চাইলেও অনেকেই সময়মতো ঋণ পরিশোধ করেন না। দিন গড়ায়, মাস পেরোয়- তবুও টাকা ফেরতের নামগন্ধ নেই। ফলে নানারকম সামাজিক অস্বস্তি ও মানসিক চাপের সম্মুখীন হতে হয় ঋণদাতাকে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু কার্যকর কৌশল অনুসরণ করলে সম্পর্কের অবনতি না ঘটিয়েও ধারের টাকা ফেরত পাওয়া সম্ভব। চলুন দেখে নেওয়া যাক এমন কিছু কৌশল-
১. ভদ্রভাবে মনে করিয়ে দিন
প্রথম ধাপেই উচিত ভদ্রভাবে ঋণগ্রহীতাকে টাকা ফেরতের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া। হালকা গল্পের মাধ্যমে খোঁজ নেওয়া যেতে পারে কেন তিনি টাকা দিতে পারছেন না। যদি তার আর্থিক সমস্যা থাকে, তাহলে ধৈর্য ও বোঝাপড়া রেখে কিছুটা সময় দেওয়া যেতে পারে। এতে সম্পর্ক ও পাওনা- দুটোই টিকিয়ে রাখা সম্ভব।
২. স্পষ্টভাবে টাকার কথা বলুন
অনেকেই আছেন যারা ধার নেওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান। এমন অবস্থায় সরাসরি, কিন্তু ভদ্রভাবে টাকার কথা উল্লেখ করুন। সামনাসামনি, ফোনে বা বার্তার মাধ্যমে বলুন- ‘তুমি যে টাকা ধার নিয়েছিলে, সেটা ফেরতের কথা ভাবছো কি?’
এতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপর পক্ষ দায়বদ্ধতা অনুভব করে শোধের উদ্যোগ নেন।
৩. নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করুন
বারবার মনে করিয়ে দেওয়ার পরেও যদি প্রতিক্রিয়া না আসে, তাহলে একটি সময়সীমা বেঁধে দিন। উদাহরণস্বরূপ- ‘আগামী ১০ তারিখের মধ্যে অন্তত কিছু অংশ ফেরত দিতে পারবে কি?’
সুনির্দিষ্ট সময়সীমা চাপ সৃষ্টি করে এবং ঋণগ্রহীতাকে দায়িত্বশীল করে তোলে।
৪. কিস্তিতে ফেরতের প্রস্তাব দিন
বড় অঙ্কের টাকা একবারে শোধ করা অনেকের জন্য কঠিন হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে মাসিক বা কিস্তিতে শোধের বিকল্প দিন। এতে ঋণগ্রহীতার ওপর চাপ কমবে এবং আপনি ধাপে ধাপে টাকাও ফেরত পাবেন।
৫. লিখিত চুক্তি করুন
যদি টাকার অঙ্ক বড় হয় বা আপনি সম্পদ ধার দেন, তাহলে অবশ্যই লিখিত চুক্তি করে নিন। এতে ঋণের পরিমাণ, শোধের সময়সীমা, কিস্তির নিয়ম এবং প্রয়োজনে জরিমানার শর্ত উল্লেখ থাকতে হবে। উভয় পক্ষের স্বাক্ষর থাকা এমন চুক্তি ভবিষ্যতে আইনি সুরক্ষা দিতে পারে।