রাতভর ছটফট করে ঘুম না হলে ম্যারাথনে দৌড়ানোর দরকার নেই। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, হালকা ও নিয়মিত শরীরচর্চা অনিদ্রা দূর করতে কার্যকর হতে পারে।
বিএমজে এভিডেন্স-বেইজড মেডিসিন সাময়িকীতে প্রকাশিত ২২টি র্যান্ডমাইজড ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের এক মেটা-বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ইয়োগা, তাই চি, হাঁটা ও হালকা দৌড়ের মতো ব্যায়াম ঘুমের মান উন্নত করে এবং গভীর ঘুম নিশ্চিত করে।
চীনের নানজিং ইউনিভার্সিটি অব চায়নিজ মেডিসিনের গবেষক ঝি-জুন বু বলেন, ‘শরীরচর্চা শুধু শারীরিক সুস্থতাই নয়, মানসিক প্রশান্তি ও ভালো ঘুমের জন্যও সহায়ক।’
এই গবেষণায় মোট ১৩টি ওষুধবিহীন অনিদ্রা নিরাময় পদ্ধতি বিশ্লেষণ করা হয়। এর মধ্যে ছিল ৭ ধরনের ব্যায়াম, আকুপাংচার, মালিশ ও কগনিটিভ বিহেভিয়র থেরাপি (সিবিটি)।
বিশেষভাবে কার্যকর যেসব ব্যায়াম
ইয়োগা: সপ্তাহে ২–৬ দিন, ৪৫–৬০ মিনিট অনুশীলনে ঘুমের সময় গড়ে দুই ঘণ্টা বেড়েছে।
তাই চি: সপ্তাহে ২–৩ দিন অনুশীলনে ঘুম বেড়েছে প্রায় ৫০ মিনিট।
হাঁটা বা দৌড়: সপ্তাহে ৩–৫ দিন, ৩০–৭৫ মিনিট অনুশীলনে ঘুমের মান উন্নত হয়েছে এবং অনিদ্রার লক্ষণ কমেছে।
এই ব্যায়ামগুলো শরীরের শক্তি ব্যয় করে, স্ট্রেস হরমোন (কর্টিসল) কমায়, মেলাটোনিনের নিঃসরণ বাড়ায় ও ঘুমের গভীরতা বাড়াতে সাহায্য করে।
অনিদ্রার কারণ ও চিকিৎসা
অনিদ্রা হতে পারে চাপ, অনিয়মিত ঘুমের অভ্যাস, ব্যথা, কিছু ওষুধ বা ঘুমসংক্রান্ত রোগের কারণে। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার মতে, ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রায় প্রতিদিন ঘুমে সমস্যা অনুভব করেন।
অনিদ্রার ক্ষেত্রে প্রথম চিকিৎসা হিসেবে কগনিটিভ বিহেভিয়র থেরাপি (সিবিটি) প্রয়োগ করা হয়, যা ওষুধের চেয়েও বেশি কার্যকর এবং দীর্ঘস্থায়ী সমাধান দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
ডা. শালিনি পারুতি জানান, হঠাৎ ভারী ব্যায়াম না করে ধীরে ধীরে অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। সকালে ব্যায়াম করা বেশি উপকারী। তবে ঘুমের ঠিক আগে ভারী ব্যায়াম ঘুমে বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
তিনি বলেন, “নিয়মিত যেকোনো হালকা ব্যায়াম—যা আপনি উপভোগ করেন এবং চালিয়ে যেতে পারেন—ঘুম উন্নত করার জন্য সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হতে পারে।”