ঢাকা শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

তীব্র গরমে বাইরে বের হলে যেসব বিষয় মাথায় রাখবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫, ০৬:১৫ পিএম
বাইরে বের হওয়ার আগে কাছে পর্যাপ্ত পানি রাখুন। ছবি- সংগৃহীত

গরমকাল আমাদের দেশে বছরের একটি কঠিন মৌসুম। প্রচণ্ড রোদ, ঘাম, পানিশূন্যতা এবং হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি এ সময় বেড়ে যায়। বিশেষ করে দুপুরের সময়ে বাইরে বের হলে শরীরে অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই বাইরে বের হওয়ার আগে সচেতন থাকা এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

জেনে নিন তীব্র গরমে বাইরে বের হলে যেসব বিষয় মাথায় রাখবেন-

১. হালকা ও সুতির পোশাক পরুন

তীব্র গরমে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়। সুতির বা হালকা কাপড় শরীরে বাতাস চলাচল সহজ করে এবং ঘাম শুকাতে সাহায্য করে। এতে শরীর ঠান্ডা থাকে এবং অস্বস্তি কমে যায়। গাঢ় রঙের কাপড় রোদ টেনে নেয়, ফলে আরও গরম লাগে। তাই হালকা রঙের সুতির জামা গরমে সবচেয়ে উপযোগী।

২. ছাতা, ক্যাপ বা সানগ্লাস ব্যবহার করুন

রোদ সরাসরি শরীরে পড়লে শরীরের পানিশূন্যতা দ্রুত বেড়ে যায় এবং মাথা ব্যথা বা মাথা ঘোরার মতো সমস্যা হয়। তাই ছাতা বা ক্যাপ ব্যবহার করলে মাথা সরাসরি রোদে পড়া থেকে রক্ষা পায়। সানগ্লাস ব্যবহার করলে চোখের ওপর সূর্যের ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির প্রভাব কমে এবং চোখ শুষ্ক বা জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি মেলে।

৩. শরীরে পর্যাপ্ত পানি রাখুন

গরমে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর পানি ও লবণ বের হয়ে যায়। যদি তা পূরণ না করা হয়, তবে ডিহাইড্রেশন, ক্লান্তি এমনকি অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই বাইরে বের হওয়ার সময় অবশ্যই একটি পানির বোতল সঙ্গে রাখুন। শুধু পানি নয়, লেবু-পানি, ডাবের পানি বা ওরস্যালাইন খেলে শরীরে প্রয়োজনীয় লবণ ও খনিজ পূরণ হয়, যা গরমে সুস্থ থাকতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

৪. সকাল কিংবা বিকেলের সময় বের হন

দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সূর্যের তেজ সবচেয়ে বেশি থাকে। এ সময় রোদে বাইরে বের হলে শরীরে দ্রুত গরম ধরে যায় এবং হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। তাই যদি জরুরি কাজ না থাকে, এই সময় বাইরে না যাওয়াই ভালো। প্রয়োজনে সকালে বা বিকেলে কাজ সেরে ফেলার চেষ্টা করুন।

৫. খাবারের প্রতি সতর্ক থাকুন

গরমে বাইরে বের হওয়ার আগে ভারি বা ঝাল-মশলাদার খাবার খেলে শরীর ভারী লাগে এবং গরম আরও বেশি অনুভূত হয়। এর পরিবর্তে হালকা খাবার যেমন ভাত-ডাল, সবজি, ফল বা তরল জাতীয় খাবার খেলে শরীর হালকা থাকে এবং সহজে ক্লান্তি আসে না। এছাড়া বাইরে ফাস্টফুড বা রাস্তার খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ গরমে এসব খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে খাদ্যবাহিত রোগ ছড়াতে পারে।

৬. গরম থেকে ফিরে সতেজ হোন

বাইরে থেকে ফিরে সরাসরি বরফ ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে শরীরের তাপমাত্রায় হঠাৎ পরিবর্তন হয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এর পরিবর্তে প্রথমে ঠান্ডা পানি দিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে নিন এবং কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে তারপর গোসল করুন। এতে শরীর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ফিরে আসে এবং আরামও পাওয়া যায়।

৭. শিশু ও বয়স্কদের বাড়তি যত্ন নিন

শিশু ও বয়স্করা তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। শিশুদের শরীর দ্রুত পানিশূন্য হয়ে যায় আর বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক কম থাকায় তারা সহজে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই তাদের বাইরে বের করার সময় অবশ্যই ছাতা, পর্যাপ্ত পানি এবং হালকা খাবারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রয়োজনে একেবারে গরমের তীব্র সময়ে তাদের বাইরে না নেওয়াই ভালো।