শরতের শেষে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে, বাতাসে শুষ্কতা বাড়ছে। যা শীত আগমনের ইঙ্গিত দেয়। তবে এই মৌসুমি পরিবর্তনের সঙ্গে অনেকেই ঠান্ডা-কাশি, অ্যালার্জি, ত্বক শুষ্কতা ও শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যায় ভুগেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সামান্য সচেতনতা ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মেনে চললে এই সময়টিও কাটানো যায় একদম সুস্থভাবে।
জেনে নিন শীতে সুস্থ থাকতে এখন থেকেই কি কি করবেন-
শরীর গরম রাখুন, রোগ প্রতিরোধ করুন
শীতকালে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শরীর উষ্ণ রাখা। চিকিৎসকেরা পরামর্শ দেন, সকালে বের হওয়ার সময় গলা, কান, হাত-পা ভালোভাবে ঢেকে রাখতে হবে। মাফলার, টুপি ও মোজা ব্যবহার করলে ঠান্ডা বাতাসের প্রভাব কমে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মাহফুজা ইসলাম বলেন, শরীর ঠান্ডা হলে ভাইরাল সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই গরম কাপড় ও নিয়মিত ব্যায়াম—দুটোই জরুরি।
পুষ্টিকর খাবার রাখুন দৈনন্দিন মেনুতে
শীতের সবজিগুলো শুধু রঙিনই নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর। গাজর, পালং শাক, ব্রকলি, ফুলকপি ও মিষ্টি কুমড়া শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এ সময় ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল যেমন মাল্টা, কমলা, পেয়ারা ও আপেল খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া প্রোটিন ও জিঙ্কসমৃদ্ধ খাবার—ডিম, মাছ, বাদাম ও ডাল—শরীরকে ঠান্ডা প্রতিরোধে শক্তি জোগায়।
হালকা গরম পানি ও ভেষজ পানীয় খান
শীতের সময় ঠান্ডা পানি পান না করে হালকা গরম পানি পান করা সবচেয়ে ভালো। এতে গলা ব্যথা ও সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য হয়। বাড়িতে সহজলভ্য আদা, তুলসীপাতা বা লেবু-মধু মিশ্রিত পানীয় গলার জন্য উপকারি।
ত্বক ও ঠোঁটের যত্ন নিন
শীতে বাতাসে আর্দ্রতা কমে যায়, ফলে ত্বক ও ঠোঁট শুষ্ক হয়ে পড়ে। এ সময় নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার, বেশি পানি পান এবং রাতে ঘরে ভেজা তোয়ালে ঝুলিয়ে রাখা আর্দ্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম
শীতকালে অনেকে অলস হয়ে পড়েন, কিন্তু সকালে রোদ উঠার পর হালকা হাঁটাচলা বা ব্যায়াম শরীর উষ্ণ রাখে এবং রক্তচলাচল স্বাভাবিক করে। পাশাপাশি প্রতিদিন ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখে।
চিকিৎসকের পরামর্শ
যদি ঠান্ডা-কাশি বা অ্যালার্জির সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। নিজে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়াই ভালো।