প্রতিদিন বাজার করার ঝামেলা এড়াতেই আমরা অনেকেই মাছ-মাংস কিনে এনে ফ্রিজে সংরক্ষণ করি। ফ্রিজ ভর্তি করে রেখে দিনের পর দিন বাজারের ঝঞ্জাট এড়িয়ে আমরা নিশ্চিন্তে তাজা মাছ-মাংস খেতে পারি।
কিন্তু ফ্রিজে রাখলে কতদিন সেগুলো ভালো বা খাওয়ার উপযোগী থাকবে? আর কতদিন পর তা নীরবে বিষাক্ত হয়ে ওঠে? এ বিষয়ে নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে ভয়ংকর তথ্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফ্রিজ ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমায় ঠিকই, কিন্তু পুরোপুরি থামাতে পারে না। মুরগির মাংস যত ঠান্ডাই রাখা হোক, ব্যাকটেরিয়া ধীরে ধীরে বাড়তেই থাকে। তাই নিরাপদ সময় পেরিয়ে গেলে খাবারটি পরিণত হয় বিষক্রিয়ার ঝুঁকিতে।
গবেষণার ফল বলছে, ফ্রিজের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে থাকলেও কাঁচা মুরগি সর্বোচ্চ ১ থেকে ২ দিন নিরাপদ। অনেকেই ভাবেন, ৩ থেকে ৪ দিনেও এমনকি মাসের পর মাস মাংস ভালো থাকে। কিন্তু গবেষকরা এটিকে ‘ভুল ধারণা’ বলে সরাসরি হুঁশিয়ার করেছেন।
ফ্রিজ যতবার খোলা-বন্ধ করা হয়, ভেতরের তাপমাত্রা ততবার ওঠানামা করে। তাছাড়া ফ্রিজ বেশি ভর্তি থাকা বা মাঝেমধ্যে বিদ্যুৎ চলে যাওয়া এসব কারণে তাপমাত্রার পরিবর্তন আরও দ্রুত ঘটে। বিজ্ঞানীরা জানান, তাপমাত্রা অস্থির হলে ব্যাকটেরিয়া বাড়ার গতি দ্বিগুণ হয়ে যায়।
এয়ারটাইট বা ভ্যাকুয়াম-সিল ব্যাগে রাখা মুরগি কিছুটা বেশি সময় তাজা থাকে এ কথা সত্য। কারণ বাতাস কম থাকলে ব্যাকটেরিয়ার চলাচলও সীমিত হয়। কিন্তু তবুও বিশেষজ্ঞদের স্পষ্ট মন্তব্য, সিল করা হলেও ১–২ দিনের বেশি কাঁচা মুরগি ফ্রিজে রাখা নিরাপদ নয়।
মাংস নষ্ট হয়েছে কিনা বোঝার লক্ষণও গবেষণায় তুলে ধরা হয়েছে। যেমন- টক বা অস্বাভাবিক গন্ধ। চটচটে, স্লিমি টেক্সচার। স্বাভাবিক গোলাপি রং বদলে ধূসর। সবুজাভ বা ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া। এসব লক্ষণই প্রমাণ করে, মাংস আর খাওয়ার উপযোগী নেই।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ স্পষ্ট-মাংস কেনার পর দ্রুত ফ্রিজে রাখুন, কখনোই ঘরের তাপমাত্রায় বেশিক্ষণ ফেলে রাখবেন না। এয়ারটাইট প্যাকেটে সংরক্ষণ করুন, ফ্রিজের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখুন এবং সবচেয়ে জরুরি ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ব্যবহার করুন।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন